তুমি আমাকে কতটা ভালবাসো? এই প্রশ্ন অনেক স্বামীকেই শুনতে হয় বিবাহবার্ষিকীর দিনে। নানা কথা এবং উপহারের মাধ্যমে সেসব প্রশ্নের জবাব দিয়ে থাকেন স্বামীরা। কিন্তু এবার ঘটল অবাক করার মতো ঘটনা। প্রথম বিবাহবার্ষিকীতে ভালোবেসে স্ত্রীকে চাঁদের বুকে জমি কিনে উপহার দিলেন রানাঘাটের ব্যাঙ্ককর্মী প্রদীপন সাধুখাঁ। আর এই উপহারে আপ্লুত নববধূ অনুরিমা প্রামাণিক সাধুখাঁ। এমনও যে ঘটতে পারে তা ভাবতেও পারেননি তিনি। তবে এখন ঘোর কাটিয়ে আগামী দিনে চাঁদে কেনা জমিতে বেড়াতে যেতে চান এই দম্পতি। আর এটাই এখন তাঁদের আত্মীয়স্বজন–বন্ধুবান্ধবের কাছে চর্চিত বিষয় হয়ে উঠেছে।
জানা গিয়েছে, প্রদীপন রানাঘাট এলাকার বাসিন্দা। তিনি পশ্চিমবঙ্গ গ্রামীণ ব্যাঙ্কে কর্মরত। তবে সেই ব্যাঙ্ক বীরভূমে। আর অনুরিমা মানুষের সেবার কাজে যুক্ত। অর্থাৎ আগে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের স্টাফ নার্স ছিলেন। এখন তিনি কমিউনিটি হেলথ অফিসার। তাঁদের মধ্যে আগে প্রণয় ছিস। যা বাস্তাবায়িত হয়েছে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে তাঁদের বিয়ে হয়ে। ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে এই দম্পতির প্রথম বিবাহবার্ষিকী ছিল।
কেন এমন উপহার বাছলেন? এই বিষয়ে প্রদীপন বলেন, ‘প্রথম বছর বিবাহবার্ষিকীতে স্ত্রীকে কী উপহার দেব তা বুঝতে পারছিলাম না। তখন সোশ্যাল মিডিয়ার দ্বারস্থ হই। সেখানেই চাঁদের জমি কেনার বিষয়টি মাথায় আসে। তারপরই মার্কিন সংস্থা ‘লুনার এম্বাসি’র মাধ্যমে চাঁদের জমি কিনতে সফল হয়েছি। ৩০ নভেম্বর বিবাহবার্ষিকীর দিন অনলাইনে যাবতীয় আবেদন করি। সম্প্রতি ওই জমির দলিল–সার্টিফিকেট বাড়িতে এসে পৌঁছেছে।’
আর কেমন লাগছে স্ত্রী অনুরিমার? এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিবাহবার্ষিকীতে এটা ব্যতিক্রমী উপহার। তবে চাঁদে জমির মালিক হওয়ার উপহার পাব স্বপ্নেও ভাবিনি। বাড়িতে খামে ওই দলিল দেখে আমি অবাক। এখনই অবশ্য আমাদের পক্ষে চাঁদে যাওয়া সম্ভব নয়। তবে জমির মালিক যখন হয়েছি, তখন আগামী দিনে একসঙ্গে চাঁদে যাওয়ার ইচ্ছে রয়েছে।’
উল্লেখ্য, নিম অনুযায়ী, চাঁদে জমি কিনতে হলে কম করে এক একর জমি কিনতে হয়। প্রদীপনবাবুও তাই করেছেন। ৪৫.৫ ডলার অর্থাৎ ভারতীয় টাকায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকার বিনিময়ে এক একর জমি কিনেছেন। ওই জমি তিনি পরে বিক্রিও করতে পারবেন। পৃথিবী থেকে প্রায় তিন লক্ষ ৮৪ হাজার ৪০০ কিলোমিটার দূরে থাকা উপগ্রহের জমি কিনে এখন তাঁরা আনন্দিত।