স্বামীর পরকীয়া ধরে ফেললেন স্ত্রী। আর তার জেরে সাংসারিক অশান্তি তুঙ্গে। ফোন ঘেঁটে স্বামীর পরকীয়ার ইতিহাস জেনে ফেলেছিলেন স্ত্রী। এরপর একের পর এক প্রশ্নবাণ ধেয়ে আসতে লাগল স্বামীর দিকে। তখন তিনিও পাল্টা বচসা শুরু করলেন। অবশেষে অশান্তি চরমে ওঠায় বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করলেন স্বামী নিজেই। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে কেশপুর ব্লকের আনন্দপুর থানার মোহবনী এলাকায়। মৃতের নাম অভিষেক রায় (৩৫)।
ঠিক কী ঘটেছে কেশপুরে? স্থানীয় সুত্রে খবর, বেশ কয়েক বছর গুজরাতের সুরাতে থাকতেন স্বামী অভিষেক রায়। বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন তিনি। তাঁদের আটবছর আগে বিয়ে হয়েছিল। স্ত্রী থাকতেন গ্রামের আনন্দপুরের বাড়িতে। বছরে দু’বার বাড়িতে আসতেন। আবার চলে যেতেন গুজরাতে। তাঁদের সাড়ে পাঁচ বছরের একটি সন্তানও রয়েছে। তার মধ্যেই স্বামীর পরকীয়ার কথা জানতে পারেন স্ত্রী। আর তা নিয়ে তুমুল অশান্তি হয় স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে। তখনই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। তারপর তাঁর খোঁজ মেলেনি। পরে মাঠের ধারে দেহ উদ্ধার হয় স্বামীর।
আর কী জানা যাচ্ছে? পরিবারের সদস্যদের দাবি, মোহবনী থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে নাড়াজোলের এক গৃহবধূর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল অভিষেক রায়ের। সুরাত থেকে গ্রামের বাড়ি আনন্দপুরে এলেই ওই গৃহবধূর সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত হতেন অভি্ষেক। এই নিয়ে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি লেগেই থাকত। সুরাত থেকে আনন্দপুরে অভিষেক ফিরলেও স্ত্রী সন্তানের প্রতি মন ছিল না তাঁর। দিনের অনেকটা সময় ফোনের পিছনেই কাটিয়ে দিতেন। ভুলেও ফোনটি হাতছাড়া করতেন না।
পুলিশ কী তথ্য পেয়েছে? পুলিশ সূত্রে খবর, এই ফোনে ব্যস্ত থাকা দেখেই তাঁর আচরণে স্ত্রীর সন্দেহ হয়। শুক্রবার স্বামীর ফোনটি কোনওভাবে হাতে পেয়ে যান স্ত্রী। কললিস্টে নাড়াজোলের ওই মহিলার নম্বর দেখতে পাওয়ার পর বাড়িতে তুমুল অশান্তি শুরু হয়। এই অশান্তির পর শনিবার সকাল থেকেই নিখোঁজ ছিলেন অভিষেক রায়। শনিবার বিকেলে বাড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে মাঠের ধারে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। স্থানীয় এক ব্যক্তি মাছ ধরতে যাচ্ছিলেন। প্রথমে তাঁরই নজরে পড়ে অভিষেকের দেহ। খবর দেওয়া হয় আনন্দপুর থানায়। পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে রবিবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। কোনও অভিযোগ দায়ের না হওয়ায় একটি অস্বাভাবিক মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।