সিঁথিতে সিঁদুর। হাতে কাঁচের চুড়ি। স্বামীর হাত ধরেই ছাত্রীটি এসেছিলেন স্কুলে। স্বামী এসে বলেছিলেন স্যার ভর্তি করে নিন। ছাত্রীর নাম রানি রাউত। জলপাইগুড়ির পাতকাটায় বাড়ি। পাশেই পলিটেকনিক কলেজ। সেখানকার ছাত্র প্রসেনজিৎ মাহাতোর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল রানির। পরে তাদের মধ্যে বিয়ে হয়। বিয়ের জন্য় মাধ্যমিকের টেস্টে বসতে পারেনি রানি। কার্যত এক বছর পড়াশোনা বন্ধ ছিল রানির। তবে ফের তাকে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য উৎসাহ দেন তার স্বামী। তিনিই স্ত্রীকে সঙ্গে করে জলপাইগুড়ির অরবিন্দ উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে নিয়ে আসেন। তবে করোনাকালে অনেকেই যখন স্কুল ছুট তখন এভাবে বিয়ের পরেও ফের স্কুলে ভর্তি হওয়ার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষকরাও।
তবে সেই রানিই এবার মাধ্যমিকে ৬৩ শতাংশ নম্বর নিয়ে পাশ করেছে। স্বামী প্রসেনজিৎ বর্তমানে চেন্নাইতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। সেখান থেকেই স্কুলে তিনি ফোন করে স্ত্রীকে ভর্তি নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষও এনিয়ে আর দুবার ভাবেননি। ছাত্রীকে নিয়ে যথেষ্ট উৎসাহিত স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ক্ষৌণিশ গুহ বলেন, বিয়ের পরে স্বামী হাত ধরে স্ত্রীকে স্কুলে নিয়ে এসে ভর্তি করে দিয়েছে এমন ঘটনা আর দ্বিতীয়বার পাইনি। ছাত্রীকে নিয়ে আমাদেরও গর্ব হচ্ছে। রানি বলেন, বিয়ের পরে এক বছর পড়াশোনা প্রায় বন্ধই ছিল। প্রসেনজিৎ জোর করে আবার স্কুলে ভর্তি করিয়েছে। স্বামী প্রসেনজিৎ বলেন, রানি প্রথমে পড়তে অতটা রাজি ছিল না। কিন্তু কেন পড়াশোনা করা প্রয়োজন সেটা রানিকে বুঝিয়েছি।