কাজে ব্যস্ত থাকতেন স্বামীরা। দিতে পারতেন না সময়। তার জেরে জীবনে একঘেয়েমি তৈরি হয়েছিল। সেজন্যই বাড়ি ছেড়ে রাজমিস্ত্রিদের সঙ্গে পালিয়েছিলেন। এমনই দাবি করলেন বালির নিশ্চিন্দার দুই বধূ অনন্যা এবং রিয়া কর্মকার।
অনন্যা পুলিশকে জানিয়েছেন, আট বছর আগে পলাশের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের কোনও সন্তান হয়নি। একেবারেই সময় দিতেন না স্বামী। যিনি অ্যাকাউন্টসের কাজ করতেন। তার জেরে তিতিবিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন। হাঁফিয়ে উঠেছিলেন একঘেয়ে জীবনে। একইসুরে কর্মকার বাড়ির বউ রিয়া জানান, তাঁকে সময় দিতেন না স্বামী। সেজন্য তাঁকেও গ্রাস করেছিল একঘেয়েমি। সেই পরিস্থিতিতে কর্মকারদের দোতলা বাড়ির নির্মাণকাজের জন্য আসা সামশেরগঞ্জের বাসিন্দা শেখর রায় এবং শুভজিৎ দাসের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাঁদের। যাঁরা অত্যন্ত মিষ্টভাষী ছিলেন বলে দাবি করেছেন দুই বধূ।
উল্লেখ্য, বুধবার সকালে আসানসোল স্টেশন থেকে দুই বধূ-সহ দুই রাজমিস্ত্রিকে আটক করেছে পুলিশ। পরে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। অনন্যার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় শেখরের। শুভজিতের প্রেমে বড় বউ রিয়া। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর নিজেদের বাড়িতে ফিরে যান দুই রাজমিস্ত্রি। তবে অনন্যাকে একটি মোবাইল ফোন দিয়ে যান শেখর। সেই ফোনেই দুই বধূর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন শেখর এবং শুভজিৎ। অভিযোগ, গত ১৫ ডিসেম্বর শ্রীরামপুরে শীতের পোশাক কিনতে যাওয়ার নাম করে শেখরের সঙ্গে দেখা করেন অনন্যা ও রিয়া। সেখানেই পালানোর পরিকল্পনা করেন তিনজন। সঙ্গে ছিল রিয়ার সাত বছরের ছেলে আয়ুষও। তাকে নিয়ে প্রথমে সামশেরগঞ্জ যান তিনজন। এক রাত সেখানে কাটিয়ে মুম্বইয়ের উদ্দেশে রওনা দেন অনন্যা, রিয়া, শেখর এবং শুভজিৎ। তারইমধ্যে মোবাইল ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করে অনন্যার অবস্থান জানতে পারেন গোয়েন্দারা। তিনি মুম্বইয়ে আছেন জেনে সেখানে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে হাওড়া সিটি পুলিশের একটি দল। পরে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, আর্থিক সমস্যা জন্য রাজ্যে ফেরার পরিকল্পনা করছেন চারজন। মুম্বই থেকে ট্রেনে আসানসোল আসছেন তাঁরা। সেখান থেকে বাসে মুর্শিদাবাদ যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সেই খবরের ভিত্তিতে বুধবার সকালে আসানসোল স্টেশন থেকে চারজনকে আটক করে পুলিশ। উদ্ধার করা হয় আয়ুষকে। আজ তাঁদের আদালতে পেশ করা হবে।