কোনও টাকা পয়সা দিইনি। আমার ছেলের চাকরি কেন গিয়েছে জবাব দেবে সরকার। কী করে আমাদের সংসার চলবে তার দায়িত্বও সরকারের। সাংবাদিকদের সামনে এভাবেই নিজের ক্ষোভ উগরে দিলেন আদালতের নির্দেশে বরখাস্ত হওয়া পশ্চিম বর্ধমানের এক শিক্ষকের বাবা।
গত সোমবার প্রাথমিক দুর্নীতি মামলায় ২৬৯ জনকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তার মধ্যে রয়েছে পশ্চিম বর্ধমানের লাউদোহার নবঘনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত টিচার ইন চার্জ সুশান্ত চট্টোপাধ্যায়ের নাম। চলতি সপ্তাহেই তাঁকে বরখাস্তের চিঠি ধরিয়েছে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিস। শুক্রবার তাঁর বাড়ি যান সাংবাদিকরা। সুশান্তবাবুর বাবা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নবীন চট্টোপাধ্যায় জানান ছেলে আসানসোল গিয়েছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে চাকরি পেয়েছে। তার রিভিউ হয়েছে। ইন্টারভিউ হয়েছে। তার পর জয়েনিং লেটার এসেছে। সাড়ে চার বছর চাকরি করার পর শুনছি ওর না কি চাকরিটা নেই’।
কিন্তু কেন গেল সুশান্তবাবুর চাকরি? জবাবে নবীনবাবু বলেন, ‘সেটা সরকারের সঙ্গে বুঝুন। সরকার আমার ছেলেকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার দিয়েছে। কেন চাকরি গেল তারাই বলতে পারবে। যাদের চাকরি গিয়েছে তাদের পরিবার কী খাবে তা সরকারের দায়িত্ব।’
চাকরি পেতে কি কোনও টাকা পয়সা দিয়েছিলেন সুশান্তবাবু? পত্রপাঠ সেই সম্ভাবনা খারিজ করে দেন নবীনবাবু। বলেন, ‘ওসব কোনও সিনই নেই। বলেছিল অফলাইনে দরখাস্ত করতে। তার পর ইন্টারভিউ হয় বিকাশ ভবনে। ২,৭০০-র কিছু বেশি প্রার্থী ছিলেন। আমি নিজে ছিলাম সেখানে। ইন্টারভিউর পরে আবার ভেরিফিকেশ হয়। তার পর অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার আসে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে নিয়োগপত্র পায় আমার ছেলে।’
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিস থেকে জানানো হয়েছে, ২০১৮ সালের ৯ জানুয়ারি দুর্গাপুরের অন্ডাল গার্লস স্কুলে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন সুশান্ত চট্টোপাধ্যায়। এক বছর কাটতে না কাটতেই মিউচুয়াল ট্রান্সফার নিয়ে লাউদোহার নবঘনপুর প্রাথমিক স্কুলে গত ২০১৯ সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। বরখাস্ত হওয়ার আগে পর্যন্ত ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত টিচার ইন চার্জের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন তিনি।