দত্তপুকুর থানা এলাকার ছোট জাগুলিয়ায় যুবকের মুণ্ডহীন দেহ উদ্ধারের ঘটনার কিনারা করল পুলিশ। মৃতের হাতে উল্কি দেখে তাঁকে সনাক্ত করেছে পরিবার। ঘটনায় অভিযুক্তের খুড়তুতো ভাই ও তাঁর স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে দত্তপুকুর থানার পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, পরকীয়া সম্পর্ক ও চুরির মালের বাটোয়ারা নিয়ে বিবাদের জেরে এই খুন।
মঙ্গলবার ছোট জাগুলিয়ায় খালের পাশে চাষের খেতে উদ্ধার হয় এক যুবকের মুণ্ডহীন দেহ। তার পর থেকে কাটা মুন্ডুর খোঁজ শুরু হলেও এখনও সেটি পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্তের রিপোর্টে চিকিৎসকরা জানান, এক কোপে কাটা হয়েছে যুবকের মুন্ডু। ওদিকে মুন্ডু না পাওয়া গেলেও হাতের উল্কির সূত্র ধরে যুবকের খোঁজ শুরু করেন তদন্তকারীরা। এর পরই জানা যায় নিহত যুবকের নাম হজরত লস্কর। কুখ্যাত দুষ্কৃতী হজরতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক চুরি - ছিনতাই ও মাদক পাচারের অভিযোগ রয়েছে। গাইঘাটা থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে আঙুলকাটা এলাকায় বাড়ি তাঁর। হজরতকে খুনের অভিযোগে তাঁর খুড়তুতো ভাই ওবাইদুল গাজি ও তাঁর স্ত্রী পূজা দাসকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তদন্তকারীদের দাবি, ওবাইদুলের স্ত্রী পূজা নিষিদ্ধ পল্লিতে বাস করতেন। সেখানে নিয়মিত যাতায়াত ছিল হজরতের। তাঁর সূত্রেই পূজার সঙ্গে পরিচয় হয় ওবাইদুলের। বছর দেড়েক আগে নিজের প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও সন্তানদের ছেড়ে পূজাকে বিয়ে করেন ওবাইদুল। এর পর বনগাঁ শহরের ২ নম্বর রেল গেট এলাকায় থাকতে শুরু করে সে।
পুলিশের দাবি, ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ের পরেও হজরতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল পূজার। সেই আক্রোশ থেকেই হজরতকে খুন করেছে ওবাইদুল। তবে এই খুনের পিছনে টাকা পয়সার বাটোয়ারা নিয়ে বিবাদ থাকতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, উত্তরপাড়া থানার এক পুলিশ আধিকারিকের সহযোগিতায় সমাজের মূল স্রোতে ফেরার চেষ্টা করছিলেন হজরত। তার জেরেই কি অন্য দুষ্কৃতীদের আক্রোশের মুখে পড়লেন তিনি।
নিহতের পরিজনরা প্রাথমিকভাবে দেহ সনাক্ত করেছেন। তবে মৃতের দেহের পরিচয় নিশ্চিত হতে DNA পরীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ধৃতদের বারাসত আদালতে পেশ করা হয়। তাদের জেরা করে খুনের আসল কারণ জানতে চান তদন্তকারীরা।