বাংলা নিউজ > বাংলার মুখ > অন্যান্য জেলা > স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে রোগী ফেরালে বাতিল হবে লাইসেন্স, কড়া বার্তা রাজ্যের

স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে রোগী ফেরালে বাতিল হবে লাইসেন্স, কড়া বার্তা রাজ্যের

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। (ফাইল ছবি, সৌজন্য পিটিআই)

এবার কড়া নির্দেশ জারি করল স্বাস্থ্যভবন। এমনকী লাইসেন্স বাতিলের কঠিন সিদ্ধান্তও নেওয়া হতে পারে।

বিধানসভা নির্বাচনের আগে স্বাস্থ্যসাথী নিয়ে বেসরকারি হাসপাতালকে কড়া বার্তা দিল রাজ্য সরকার। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও কেউ হয়রান হলে বরদাস্ত করা হবে না—মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন আগেই। কিন্তু কিছু হাসপাতাল তাতে কর্ণপাত করছিল না বলে অভিযোগ উঠছিল। এবার কড়া নির্দেশ জারি করল স্বাস্থ্য ভবন। এমনকী লাইসেন্স বাতিলের কঠিন সিদ্ধান্তও নেওয়া হতে পারে। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নির্দেশ দিয়েছেন, এবার থেকে যে সব হাসপাতাল কিংবা নার্সিংহোম স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে রোগীকে ফেরাবেন, তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

স্বাস্থ্য ভবনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে ১০ শয্যা বা তার বেশি বেডের সরকারি এবং বেসরকারি সব হাসপাতালকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হতেই হবে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা রোগী বা তাঁর পরিবারকে পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রেও কোনও আপত্তি চলবে না। অন্যথায় অভিযুক্ত হাসপাতাল বা নার্সিংহোমের লাইসেন্স বাতিল করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে ‘দি ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট (রেজিস্ট্রেশন, রেগুলেশন অ্যান্ড ট্রান্সপারেন্সি) অ্যাক্ট ২০১৭’ প্রয়োগ করা হবে।

উল্লেখ্য, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বেশ কিছু হাসপাতাল–নার্সিংহোম স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা না দিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাতে সরকারের ভাবমূর্তিই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। তাই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। তারপর একাধিকবার এই হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের মালিকপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা। কিন্তু তাতেও কাজ না হওয়ায় এই নির্দেশিকা জারি করে রাজ্য প্রশাসন।

স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী এই নির্দেশ জারি করে বলেছেন, ‘এদিনও (মঙ্গলবার) প্রায় ১০০টি প্রাইভেট হাসপাতাল–নার্সিংহোম স্বাস্থ্যসাথীতে নাম লিখিয়েছে। আশা করছি, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাকি থাকা কয়েকটি হাসপাতালও যুক্ত হবে। আমরা প্যাকেজ রেট বাড়িয়েছি। এরপরও নিয়ম না মানলে কড়া অবস্থান নেব।’ ক্লিনিকাল এস্টাব্লিশমেন্ট (সিই) আইনে কী বলা রয়েছে? আইনের সাত নম্বর ধারার তিন নম্বর উপধারায় বলা রয়েছে, ‘রাজ্যের সিই লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাসপাতালকে কেন্দ্র–রাজ্য সরকারের যাবতীয় প্রকল্প রূপায়ণে যথাযথ সাহায্য করতে হবে।’

এই বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্টই বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট কোনও কারণ ছাড়া স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতাধীন রোগীদের ভরতি নেওয়া না হলে এবং অভিযোগ আসলে তদন্ত করে লাইসেন্স বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য। সূত্রের খবর, বর্তমানে রাজ্য–কেন্দ্রীয় সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে স্বাস্থ্যসাথীতে যুক্ত হয়েছে বাংলার ২,০০০-র বেশি হাসপাতাল। এর মধ্যে দক্ষিণ ভারতের ভেলোর, দিল্লির এইমস–সহ একাধিক নামজাদা চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে পূর্ব ভারতের সর্ববৃহৎ ক্যান্সার চিকিৎসাকেন্দ্র চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের রাজারহাটের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসও। এখন দেখার রাজ্যের এই হুঁশিয়ারির পর হাসপাতালগুলি কী পদক্ষেপ করে।

বন্ধ করুন