যেখানে বিজ্ঞান–প্রযুক্তি নিয়ে শিক্ষা বিস্তার হওয়ার কথা সেখানেই চর্চার বিষয় হয়ে উঠল শ্রীমদভগবদ্গীতা! যা কার্যত বেমানান। আর তাতেই উঠে গেল গৈরিকীকরণের অভিযোগ। শুধু তাই নয়, এই ঘটনা ঘটেছে খোদ বাংলায়। শিবপুর আইআইইএসটি–তে প্রথমবর্ষের ছাত্রছাত্রীদের ভার্চুয়াল কর্মশালায় শ্রীমদভগবদ্গীতা ও হিন্দু ধর্মের মাহাত্ম্য প্রচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রী থেকে শিক্ষক–শিক্ষিকা এবং আধিকারিকরা। এই কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন ঘটনায় আলোড়ন পড়েছে। জোর চর্চা শুরু হয়েছে সব মহলে।
ঠিক কী ঘটেছে সেখানে? দৃশ্য এক, আইআইইএসটি প্রতিষ্ঠানে স্নাতক প্রথমবর্ষের ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস শুরু হবে আর কয়েকদিনের মধ্যে। তার আগে পড়ুয়াদের ভার্চুয়াল কর্মশালা চলছে। সেখানে শনিবার, ১৮ ডিসেম্বর শিক্ষায় গৈরিকীকরণের অভিযোগ উঠেছে। চিফ ওয়ার্ডেন সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায় যখন নবাগত পড়ুয়াদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখছিলেন, তখন তাঁর পরিচয় দেখানো হচ্ছিল অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি) রাজ্য সভাপতি হিসেবে!
দৃশ্য দুই, কর্মশালার দ্বিতীয় দিনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি দেখানো হয়। সেখানে মোদী কীভাবে সারা দেশে বছরে দু’কোটি বেকারকে চাকরি দিচ্ছেন তা তুলে ধরা হয়। এই নিয়েও জোর শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বারবার এমন ঘটনা সেখানে কেন ঘটল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অনেকেই বলছেন, একুশের নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর নতুন প্রজন্মকে ধরতে এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
দৃশ্য তিন, এরপর কর্মশালা চলাকালীন বক্তাদের তালিকায় না থাকা এক ব্যক্তিকে এনে ভগবদ্গীতা ও হিন্দু ধর্মের মাহাত্ম্য প্রচার করা হয়। এই ঘটনাকেই গৈরিকীকরণের চরম পর্যায় বলে মনে করছেন ছাত্রছাত্রী থেকে শিক্ষক ও আধিকারিকরা। কারণ এখানে বিভিন্ন ধর্মের ছাত্রছাত্রীরা পাঠ নিতে আসেন। সেখানে কেরল হিন্দু ধর্মের প্রচার কার্যত বেমানান। তাই প্রশ্ন উঠছে, শুধু হিন্দু ধর্মের প্রচার কেন?
এই কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানে এমন ঘটনার জন্য অভিযোগের তির প্রতিষ্ঠানের অধিকর্তা পার্থসারথি চক্রবর্তীর দিকে। উল্লেখ্য, তিনি বারাণসীর আইআইটি বিএইচইউ থেকে এসেছেন। শিবপুর আইআইইএসটি’র দায়িত্ব পেয়েই গৈরিকীকরণের চেষ্টা করছেন। যদিও এর বড় অভিযোগ উঠলেও কেউ এই নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। তাতে আরও বিতর্ক বাড়ছে।