অনশনে বসার হুঁশিয়ারি দিলেন আইআইটি খড়গপুরের অধ্যাপকদের একাংশ। সূত্রের দাবি, সম্প্রতি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৮৬ জন অধ্যাপককে 'শো-কজ নোটিশ' ধরানো হয়েছে। তারই প্রতিবাদে অনশনে বসার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এমনকী, এই শো-কজ নোটিশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার কথাও নাকি ভাবছেন সংশ্লিষ্ট অধ্যাপকরা।
ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন ১০০ জনেরও বেশি অধ্যাপক। বৃহস্পতিবার থেকে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে এবং বুকে কালো ব্যাজ সেঁটে শুরু হয়েছে তাঁদের এই আন্দোলন।
এই বিবাদের সূত্রপাত হয় গত সেপ্টেম্বর মাসে। আইআইটি খড়গপুরের ডিরেক্টর-সহ গোটা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেই একগুচ্ছ অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়ে নালিশ করেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন (আইআইটিটিএ)-এর সদস্যরা।
তাঁদের অভিযোগের তালিকায় ছিল - ডিরেক্টরের স্বজনপোষণ, খেয়ালখুশি মতো শিক্ষক ও অধ্যাপক নিয়োগ, এখনও পর্যন্ত মাল্টি সুপার-স্পেশালিটি হাসপাতাল চালু না করতে পারা, শিক্ষক ও অধ্যাপকদের কাছ থেকে বেআইনিভাবে অতিরিক্ত টাকা আদায় এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে আইআইটি-র শিক্ষক ও অধ্যাপকদের মধ্যেকার সম্প্রীতি নষ্ট করার অপচেষ্টা।
প্রসঙ্গত, এই প্রতিষ্ঠানের বর্তমান ডিরেক্টর বীরেন্দ্র কুমার তিওয়ারি দায়িত্বভার গ্রহণ করেন ২০১৯ সালে। তাঁর কার্যকালের মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে।
সংশ্লিষ্ট শিক্ষক সংগঠনের এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, গত ২০ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে ওই চিঠি পাঠানো হয়েছিল। তাতে জানানো হয়েছিল, আগেই এই সমস্যাগুলি নিয়ে নানা মহলে একাধিকবার অভিযোগ জানানো হয়েছে। কিন্তু লাভ কিছুই হয়নি।
সংশ্লিষ্ট ওই সূত্রের দাবি, এরপর মন্ত্রকের তরফে আবেদন করা হয়, একজন নতুন ডিরেক্টরকে নিয়োগ করা হোক। যাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা আরও বেশি হবে এবং যাঁর আগেও এই ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে।
এর জেরেই গত ১২ নভেম্বর আইআইটি কর্তৃপক্ষের তরফে পাল্টা শো-কজ নোটিশ ধরানো হয় বলে অভিযোগ। সেই নোটিশ পাঠানো হয় আইআইটিটিএ অফিস বেয়ারারদের। আলাদা একটি শো-কজ নোটিশ পাঠানো হয় আইআইটিটিএ-র সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অমলকুমার দাসকে।
পরবর্তীতে এই ঘটনার প্রতিবাদে ৮৬ জন অধ্যাপক একটি গণ-আবেদন পাঠায় আইআইটি কর্তৃপক্ষকে। তাঁদের দাবি ছিল, যে চারজন আইআইটিটিএ অফিস বেয়ারারকে শো-কজ নোটিশ পাঠানো হয়েছে, তাঁদের থেকে সেই নোটিশ অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে ওই ৮৬ জন অধ্যাপক অনশনে বসবেন।
এর জবাবে ওই ৮৬ জন অধ্যাপককেও শো-কজ নোটিশ ধরায় আইআইটি কর্তৃপক্ষ। তারা এই ঘটনাক্রম নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।