সীমান্ত টপকে বাংলার মাটিতে পা রেখেছেন চিনের নাগরিক হান জুনেই। এই ঘটনায় এবার তদন্তে নামল রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। মঙ্গলবার এই খবর মিলেছে প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর থেকে। কয়েকদিন আগে মালদহের কালিয়াচকের মিলিক সুলতানপুর থেকে ওই চিনের নাগরিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্তে জানা যায়, সীমান্ত টপকে বাংলাদেশ থেকে ভারতের মূল ভূখণ্ডে প্রবেশ করেন হান। কিন্তু কোন পথে প্রবেশ করেছিলেন তিনি? সেই গোপন পথের খোঁজ পেতে ময়দানে নামল এসটিএফ।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২ জুন বিজনেস ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন চিনের হুবাই প্রদেশের বাসিন্দা হান জুনেই। তারপর সীমান্ত টপকে ভারতে অনুপ্রবেশ করেন তিনি। নদী পথেই বাংলাদেশ থেকে বাংলায় আসেন হান জুনেই। সেখান থেকে কাঁটা তার নেই, এমন এলাকা দিয়ে প্রবেশ করেন মূল ভূখণ্ডে। ধৃতকে নিয়ে গিয়ে ইতিমধ্যে গোটা ঘটনার পুনর্নির্মাণ করেছেন তদন্তকারীরা। সেখান থেকেও অনেক সূত্র মিলেছে। তার ভিত্তিতেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় এসটিএফ।
চিনের এই নাগরিককে আগেই জেরা করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনআইএ)। জেরায় প্রকাশ্যে এসেছে চিনে সেনা পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতেন হান। ইংরেজিতে পারদর্শী। ফলে তাঁর সঙ্গে লাল ফৌজের যোগ আরও স্পষ্ট হয়েছে। ভারতের তথ্য চিনে পাচার করতেই এই অনুপ্রবেশ বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই হান জুনেইয়ের এক ব্যবসায়ীক সহযোগী সান সিয়াংকে গ্রেফতার করেছে লখনউ এটিএস। তাঁর কাছ থেকেও বেশ কিছু তথ্য মিলেছে। গুরুগ্রামের একটি হোটেলের মালিক হান জুনেই।
আবার গ্রেফতার হওয়া হান জুনেই চিনের গুপ্তচর বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। এবার তাঁদের আশঙ্কা, হানের শরীরের ভিতরে থাকতে পারে কোনও মাইক্রোচিপ। যা নিশ্চিত করতে এবার তাঁর সিটি স্ক্যান করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তদন্তকারীরা। তবে কী কোনও বড় সাইবার হানার পরিকল্পনা নিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন তিনি? উঠেছে প্রশ্ন। কারণ চিনের সঙ্গে সীমান্ত সম্পর্ক ভারতের খারাপ হওয়াতেই তাদের বহু অ্যাপ নিষিদ্ধ করে দেয় ভারত সরকার। তার বদলা নিতেই হান জুনেইকে এখানে পাঠানো হয়েছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, হানের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত হওয়া ল্যাপটপ ও আইফোনের পাসওয়ার্ডে মান্দারিন ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। যা উত্তর–চিনে বেশ জনপ্রিয় এই ভাষা। এছাড়া আরও একটি সোশ্যাল গ্রুপে মান্দারিন ভাষায় কথোপকথনেরও তথ্য মিলেছে। এখন মান্দারিন ভাষা জানেন এমন ব্যক্তির খোঁজ করছে পুলিশ। তবে আজ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন মালদহ জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া ও ডেপুটি পুলিশ সুপার প্রশান্ত দেবনাথ।