মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে আজ আর কোনও ফারাক নেই সাবেক ছিটমহলের। যথারীতি স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সোমবার সাবেক ছিটে ছিল উৎসবের আমেজ। একাধিক সাবেক ছিটে তোলা হয়েছে জাতীয় পতাকা। আকাশে উড়েছে জাতীয় পতাকার রঙের বেলুন। স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হয়েছিলেন এই অনুষ্ঠানে। কিন্তু এত কিছুর পরে আফসোসটা কিছুতেই কাটছে না সাবেক ছিটবাসীদের অনেকেরই। তাঁদের একাংশের দাবি, আমরা স্বাধীন হয়েছি। এলাকায় উন্নয়নও ধাপে ধাপে হচ্ছে। কিন্তু জমির কাগজটা এখনও পেলাম না।
২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে কার্যত স্বাধীন হয়েছিল ছিটমহল। ছিটমহল বিনিময় চুক্তির মাধ্যমে অধিকার ফিরে পেয়েছিলেন সেখানকার বাসিন্দারা। কোচবিহারের বিস্তীর্ণ এলাকাতেও রয়েছে এই সাবেক ছিটমহল। তবে ২০১৫ সালের আগে পর্যন্ত ভারত ভূখণ্ডের মধ্য়ে থাকা তৎকালীন বাংলাদেশি ছিটে ভারতের জাতীয় পতাকা তোলাটা এতটা সহজ ছিল না। তবুও সেই সময় জাতীয় পতাকা তুলতেন তৎকালীন ছিটবাসীরা। নিজ ভূমে পরবাসী ছিলেন তৎকালীন ছিটমহলের বাসিন্দারা। মূল ভূখণ্ডের কোনও স্কুলেও ছিটমহলবাসী পরিচয় দিয়ে পড়ার সুযোগ ছিল না তাঁদের। এমনকী সেই সময় ছিটমহলবাসী পরিচয় দিয়ে দিনহাটার হাসপাতালেও চিকিৎসা করাতে আসতে ভরসা পেতেন না তৎকালীন ছিটমহলবাসীরা।
তবে সেসব দিন আজ অতীত। ছিটমহল বিনিময়চুক্তি হওয়ার পরে কার্যত স্বাধীনতা পেয়েছেন সাবেক ছিটবাসীরা। কিন্তু বঞ্চনার সেই কালো দিনের অবসান কি হয়েছে? সাবেক ছিটের বাসিন্দা জয়নাল আবেদিন বলেন, আমরা ভারত রাষ্ট্রের নাগরিক হতে পেরে গর্বিত। আমরা শহিদদের স্মরণ করছি। সাবেক ছিটমহলে রাস্তা, বিদ্যুতের সংযোগের কাজ হয়েছে। কিন্তু জমির কাগজ এখনও আমরা পেলাম না। এনিয়ে আফসোসটা থেকেই গিয়েছে। কর্মসংস্থানেরও কোনও ব্যবস্থা নেই। কার্যত সাবেক ছিটে কান পাতলে আজও শোনা যায় সেই আফসোসেরই কথা।