শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। তার পর থেকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ। মারামারি, দাঙ্গা, লুঠপাঠ, খুন, রাহাজানি পদ্মাপারে চরম আকার ধারণ করেছে। তার উপর হিন্দুদের প্রতি নির্যাতন ভয়াবহ আকার নিয়েছে। যার জন্য ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায় চলে আসতে চাইছেন হিন্দুরা। এই আবহে হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার ওপার বাংলায় আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। হিন্দুদের উপর লাগাতার হামলা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। যার প্রভাব পড়েছে ভারতে। আর তার জেরে ভারত এবং বাংলাদেশ বনগাঁর পেট্রাপোল সীমান্তের নো–ম্যানস ল্যান্ডে বন্ধ হয়েছে দু’দেশের যৌথ কুচকাওয়াজ। এই ঘটনা জানতে পেরে ফিরে যাচ্ছেন পর্যটকরা।
বাংলাদেশ থেকে কলকাতা দখলের হুঙ্কার দেওয়া হয়েছিল। হামলা করার উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করা হয়েছিল। ওপারের জঙ্গিরা এপারে ধরা পড়তে শুরু করেছে। ভারত যে বার্তা দিয়েছিল ইউনুস সরকারকে তা শোনার পরিবর্তে বাংলাদেশে হিন্দুরা এখন ভাল আছে বলে দাবি করা হয়েছিল। ইতিমধ্যেই ভারতকে বাংলাদেশ বিরোধী তকমা দেওয়া হয়েছে। যেহেতু বিপদে শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়িয়ে ভারত তাঁকে আশ্রয় দিয়েছে। রংপুর–সহ একাধিক মন্দিরে হামলা, হুমকি থেকে শুরু করে কীর্তন বন্ধ করা এবং পুরোহিতকে খুন করার মতো ঘটনা ঘটেছে। এই আবহে যৌথ কুচকাওয়াজ বন্ধ করা হয়েছে। এই কুচকাওয়াজ আবার শুরু করার দাবি জানিয়েছেন ভারতীয় এবং বাংলাদেশিদের একাংশ।
আরও পড়ুন: সদস্য সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি, পুরষ্কারের টোপ দিয়ে বিতর্কে বিজেপি বিধায়ক
পঞ্জাবের ভারত–পাকিস্তানের মধ্যে আটারি–ওয়াঘা সীমান্ত রয়েছে। সেখানেও শান্তি বজায় রাখতে হয় দুই দেশকে। তাই সৌজন্য বিনিময়ও করা হয়। তেমনই ২০১৩ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারত–বাংলাদেশের বনগাঁ সীমান্তের পেট্রাপোলে দু’দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে যৌথ কুচকাওয়াচ শুরু হয়। প্রত্যেকদিন বিকেলে নো–ম্যানস ল্যান্ডে দু’দেশের জওয়ানরা একসঙ্গে প্যারেড করতেন। এই যৌথ কুচকাওয়াজ দেখতে দেশের বহু মানুষ পেট্রাপোল সীমান্তে ভিড় করতেন। বাংলার মানুষজন তো প্রায়ই দেখে থাকেন। স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে হাজির হয়ে দেখাতেন শিক্ষকরা। ওখানে বসে দেখার জন্য গ্যালারিও তৈরি করা হয়। তবে সেটা এখন ফাঁকা।
করোনাভাইরাস যখন গোটা বিশ্বে দাপট দেখাচ্ছিল তখন তার প্রভাব ভারত বাংলাদেশে পড়েছিল। তার জেরে যৌথ কুচকাওয়াচ বন্ধ করে দিতে হয়েছিল। সেসব মিটে যাওয়ার পরে আবার শুরু হয়েছিল। তবে প্রত্যেকদিনের বদলে সপ্তাহের দু’দিন শনিবার এবং মঙ্গলবার যৌথ কুচকাওয়াজ চলত। আধা ঘণ্টার সেই প্যারেড দেখতে ভিড় জমাতেন ৮ থেকে ৮০। এখন পদ্মাপারে বিস্তর অশান্তি শুরু হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যৌথ প্যারেড বন্ধ করা রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, বাড়ির সামনে এই যৌথ কুচকাওয়াজের অনুষ্ঠান আবার শুরু হোক।