ভারত থেকে সব দেশেই পিঁয়াজ রফতানি বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু নিকটবর্তী সীমান্ত দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। এই পদক্ষেপের পর বাংলাদেশে পিঁয়াজের দাম আকাশছোঁয়া হয়েছে। রীতিমতো ডাবল সেঞ্চুরি করেছে। ২০০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু এত দাম দিয়ে কেনা সম্ভব নয়। তাই বিকল্প পথ পাচার। পিঁয়াজ পাচারের এখন বাড়বাড়ন্ত। সোনা বা গরু পাচার করার থেকে পিঁয়াজ পাচার করার ঝক্কি অনেক কম। এমনকী ধরা পড়লেও বিরাট কোনও শাস্তি হবে না। মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ থেকে সীমান্তের চোরাপথ দিয়ে এই পিঁয়াজ পাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ। একটি বস্তায় ৫০ কেজি পিঁয়াজ থাকে। বস্তা প্রতি ১০ হাজার টাকায় পিঁয়াজ পাচার হচ্ছে বাংলাদেশে বলে খবর।
এদিকে পিঁয়াজ পাচারই এখন পাচারকারীদের কাছে সেফ গেম। ভারত–বাংলাদেশ সীমান্তে পাচারকারীদের পিঁয়াজ ওপারে চালান করার ঘটনায় চাপ বাড়ছে বিএসএফ এবং শুল্ক দফতরের উপর। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএসএফ জওয়ান বলেন, ‘অন্ধকার এবং শীতের সুযোগ নিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে পিঁয়াজ পাচার বাড়ছে। মাঝে কৃষিজমি থাকায় ভারতীয় নাগরিকরা ওপারে যাওয়ার সময় অন্যান্য সামগ্রীর মধ্যেই পিঁয়াজ লুকিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।’ পিঁয়াজ পাচারের প্রবণতা বৃদ্ধি নিয়ে বনগাঁর এক ব্যক্তি জানান, বিএসএফ এখন নতুন পাচার নিয়ে খুব সতর্ক হয়ে রয়েছে। আর পিঁয়াজ নিয়ে কেউ সন্দেহ করছে না। তাই পাচারের প্রবণতা বাড়ছে।’
অন্যদিকে এই পিঁয়াজ পাচারের কথা এবার প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে। তাতে বিস্তর আলোড়ন ছড়িয়ে পড়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টইয়ারের বিএসএফের ডিআইজি কে আর্য বলেন, ‘সীমান্ত পেরিয়ে কোনও কিছু পাচার করা ঠেকাতে আমাদের জওয়ানরা প্রস্তুত। বাংলাদেশে যে কোনও পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি হলে এই পাচারের প্রবণতা বাড়ে। এখন ওপারে পিঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। তাই পাচারকারীরাও পিঁয়াজ পাচারের চেষ্টা করছে। আমরা সতর্ক আছি।’ আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত ভারত থেকে আর কোনও পিঁয়াজ পাঠানো হবে না বাংলাদেশে।
আরও পড়ুন: ‘এটা গভীরভাবে অভিনীত কোনও চিত্রনাট্য নয়ত’, সংসদ হামলা নিয়ে সন্দেহ কুণালের
এছাড়া পদ্মাপারের পিঁয়াজ নিয়ে কেমন অবস্থা তৈরি হয়েছে? সেটা জানতে অনেকে এখন প্রশ্ন করছেন। সূত্রের খবর, ভারত থেকে পিঁয়াজ রফতানি বন্ধ হতেই এখানে মজুত বেড়ে গিয়েছে। এখন দাম দিয়েও চাহিদা মতো পিঁয়াজ মিলছে না। এখন এখানে চিনা পিঁয়াজ আসতে শুরু করেছে। কিন্তু বাংলাদেশে মানুষদের পছন্দ ভারতীয় পিঁয়াজ। এখন ঘুরপথে ভারতীয় পিঁয়াজ এখানে আসছে। তবে শুল্ক দফতরের অফিসার আরপি সিং বলেন, ‘লাভের পরিমাণ অত্যন্ত বেশি। তাই সীমান্ত পেরিয়ে পিঁয়াজ পাচারের খবর আসছে। কিন্তু শুল্ক দফতরের গোয়েন্দারা তৎপর রয়েছে।’