বাংলাদেশের জেলে বন্দি ছিলেন ভারতের মৎস্যজীবীরা। ফিরে এসেছেন তাঁরা। সোমবার গঙ্গাসাগরের সভায় তাঁদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেন বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী। সেই সঙ্গেই তাঁর অভিযোগ (বাংলাদেশে) মারধর করা হয়েছে ভারতের মৎস্যজীবীদের।
মমতা বলেন, পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলেন আমাদের মৎস্যজীবীরা। সীমানা পেরিয়ে চলে গিয়েছিলেন। কয়েকজনকে দেখলাম খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে। সবাই নয়, আমি বললাম খুঁড়িয়ে হাঁটছেন কেন? তাঁরা বলতে চাননি। জানতে পারলাম তাদের কয়েকজনকে মারধর করা হয়েছে। তাদের নিয়ে গিয়ে হাত দুটো দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছিল। তাদের মোটা লাঠি দিয়ে মারা হয়েছে। কয়েকজনের শারীরিক কোমর থেকে পা পর্যন্ত চোট। জামাকাপড় পরে আছে বলে বোঝা যাচ্ছে না। তার কাঁদছিল। জিজ্ঞাসা করছিলাম বলছিল। আমি ডিএমকে বলব তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে। ওনাদের একটা ট্রলার এখানে চলে আসে। জলের মধ্যে সীমানা ঠিক করতে পারে না। কিন্তু আমরা বারন করব আপনারা কখনও আমাদের সীমানার বাইরে যাবেন না। তাতে মাছ না উঠলে উঠবে। জীবন থাকলে অনেক মাছ পাবেন। এই যে দুমাস জেলে ছিলেন, পরিবার কষ্ট হয়নি। অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ…মাস খানেক আগে বাংলাদেশি ট্রলার আমাদের সীমানায় ঢুকে পড়ে। তারা অসুস্থ ছিল, আমরা চিকিৎসা করাই। যত্নে রেখেছিলাম। তাদের আমরা ফেরতও দিয়েছিলাম।
মমতা বলেন, দুই দেশই মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ থাক এটা আমরা চাই। ওদের ট্রলার আটকে ছিল , অসুস্থ ছিল তাদের সম্পূর্ণ চিকিৎসা করে ভালো করে রেখে দেশের বদনাম যাতে না হয়, বাংলার কোনও বদনাম যাতে না হয়, ভারত সরকারকেও জানিয়েছিলাম। মৎস্যজীবীরা কেমন আছেন প্রতিদিন খোঁজ রাখতাম। বাংলাদেশের যারা ছিল হ্যান্ডওভার করে দিই। ইন্ডিয়ার যারা ছিল তাদের হ্যান্ডওভার হয়। মৎস্যজীবীদের যে ভোগান্তি হয়েছে..আমরা সমুদ্রসাথী প্রকল্প তৈরি করেছি। এই প্রজেক্টটা চালু হবে। দু লক্ষ মৎস্যজীবী এতে উপকৃত হবেন। মৎস্যজীবী বন্ধু প্রকল্প করেছি। বিশেষ করে ১০০০ টাকা করে ৬০ বছরের বেশি মৎস্যজীবীদের পেনশন দেওয়া হয়েছে। কয়েকজন হাঁটতে পারছে না, মারধর করেছে, তাদেরও এই প্রকল্পে নেওয়া হবে। জল ধরো জল ভরো প্রকল্পে পাঁচ লাখের উপর পুকুর করা হয়েছে।
মমতা বলেন, গঙ্গাসাগরের জন্য় যা করার করেছি। কুম্ভ মেলায় কেন্দ্রীয় সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা দেয়। বার বার বলেছি এটাকে জাতীয় মেলা ঘোষণা করতে। কুম্ভ মেলায় ডাইরেক্ট ট্রেনে, বাসে, কপ্টারে যেতে হয়। আর আমাদের একটা একটা করে জল পার হতে হয়। এখানে রাস্তা. বিদ্যুৎ, পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৯ থেকে ১৭ কেউ যদি মারা যায় গঙ্গাসাগরে তাহলে পাঁচ লাখের বিমা করা হয়েছে। এখানে ব্রিজ করার ব্যাপারে এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু করেননি। মুড়িগঙ্গার উপর গঙ্গাসাগর সেতু তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। এটার টেন্ডারও হয়ে গিয়েছে। দেড় হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। দু তিন বছর লাগবে এটা তৈরি করতে। ৪-৫ কিমি হবে। ইঞ্জিনিয়ারদের খুব কষ্ট করে তৈরি করতে হয়। এটা হয়ে গেলে গঙ্গাসাগরের পাশাপাশি তীর্থযাত্রীরা দলে দলে আসবেন।