টানা চারদিন ধরে যুদ্ধভূমি ইউক্রেনে কিভ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলের বাঙ্কারে লুকিয়ে ছিলেন। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। এক সময় বাঁচার আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন। আর সেই চিন্তায় ঘুম উড়েগিয়েছিল তার পরিবারের। অবশেষে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন পরিবারের সদস্যরা। রবিবার রাতেই ঘরে ফিরেছেন মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের স্কুল শিক্ষক মুহাম্মদ মোউদ্দিনের পুত্র মাসুদ হামিদ পারভেজ। ঘরে ফেরার পরেই কার্যত উৎসবের মেজাজ তাঁর বাড়িতে। তাঁর কথায়, ‘ভারতীয় পতাকা আমাদের প্রাণ রক্ষা করেছে। আমাদের হাতে ভারতীয় পতাকা দেখে ইউক্রেনের সেনারা আমাদের রাস্তা চিনিয়ে দিয়েছিল।’
রবিবার রাতে যুদ্ধভূমি থেকে ঘরে ফেরার পরেই যুদ্ধের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন কিভ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মাসুদ। বাঙ্কারে লুকিয়ে থাকার সময় একসময় তাদের খাবার, জল প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল। তখন বাইরে মুড়ি-মুড়কির মতো চলছে গোলাবর্ষণ। তাঁর কথায়, ‘ভেবেছিলাম হয়তো আর বাঁচবো না। তাই শেষবারের মতো ভিডিইয়ো কল করে আব্বা আম্মাকে দেখতে চেয়েছিলাম এবং বলতে চেয়েছিলাম আমার কোনও কিছু হয়ে গেলে তোমরা চিন্তা করো না। আমার ভাইকে বাড়িতে থেকেই তোমরা পড়াশোনা করাও।’
মাসুম জানান, ‘আমরা গ্রুপ করে যখন ইউক্রেনের রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফেরার উদ্যেশ্যে হাঁটছিলাম তখন আমরা দেখি চোখের সামনে ইউক্রেনের এক বাসিন্দাকে গুলি করে রাশিয়ান সেনারা। তখন ভেবেছিলাম আর বাঁচার আশা হয়তো নেই। ইন্ডিয়ান পতাকা হাতে করে যাচ্ছিলাম বলে রক্ষা পেয়েছে। আমাদের হাতে ভারতীয় পতাকা দেখে ইউক্রেনের সোনারা আমাদের সঠিক রাস্তা চিনিয়ে দেয়। ’
বাড়ি ফেরার পর এখন পড়াশোনার জন্য মাসুদ আর ইউক্রেনে যেতে চাইছেন না। তিনি চাইছেন ভারতে থেকেই পড়াশোনা শেষ করতে। এনিয়ে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারকে আবেদন জানিয়েছেন মাসুদ।