কাবুল দখলের ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগে বেশ পালটে কীভাবে প্রাণ বাঁচিয়ে ভারতে ফিরলেন এক বাঙালি। দেশে ফিরে রোমহর্ষক কাহিনির বর্ণনা দিয়েছেন তিনি। দেশে ফিরে ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের মানুষের মধ্যে তালিবানি আতঙ্ক গ্রাস করেছে। একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থার উচ্চপদস্থ আধিকারিক সুব্রত। ১৫ অগস্ট তালিবানদের কাবুল দখলের কয়েক ঘণ্টা আগে দিল্লি পর্যন্ত পৌঁছাতে সফল হন।
সুব্রত বলেন, ‘বিমানের চাকা যখন কাবুলের মাটি ছাড়ছিল, তখন আমি এ যাত্রায় বেঁচে ফেরার জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানালাম। আমার বাড়ি থেকে কাবুল বিমানবন্দরে ১২ কিলোমিটার দূরে ছিল। যে কোনও মুহূর্তে তালিবানরা কাবুলে ঢুকে পড়ার আশঙ্কায় প্রহর গুণছিলাম। বিমান ধরার জন্য ওইদিন সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘কিন্তু বিমানবন্দরে পৌঁছতে দু’ঘণ্টা সময় লেগে যায়। ভেবেছিলাম রাস্তা ফাঁকা থাকবে, কিন্তু এত সকালে বেরিয়েও কোনও লাভ হয়নি। বিমানবন্দর রাস্তায় প্রচন্ড যানজটের মধ্যে আমার গাড়ি আটকে পড়ে। তখন আমার মনে হয়েছিল, হয়ত আর ফ্লাইটটা ধরতে পারব না। কিন্তু ভাগ্য আমার সহায় হয়। জানতে পারি, ভারতে ফেরার জন্য যে বিমানে আমার যাওয়ার কথা ছিল, তা ঘণ্টাখানেকেরও বেশি সময় ধরে বিমানবন্দরেই আটকে দেওয়া হয়েছিল। কারণ, মার্কিন বায়ুসেনার বিমান আফগান নাগরিকদের নিরাপদে নিয়ে যাওয়ার জন্য অবতরণ করেছিল। এতেই কিছুটা বাড়তি সময় পেয়ে যাই।’
সুব্রত আরও বলেন, ‘শহর জুড়ে তখন যে কোনও মুহূর্তে তালিবানদের ঢুকে পড়ার ভয়ে কাঁটা হয়ে ছিলেন সবাই। তখনই আমি নিজের বেশ পাল্টানোর সিদ্ধান্ত নিই।’ সুব্রত বলেন, ‘ যাতে আমাকে কেউ চিনতে না পারে, সেজন্য আমি নিজে দাড়ি লম্বা রেখেছিলাম। সিদ্ধান্ত নিই যে মাথায় আফগানদের মতো পাগড়ি বেঁধে যাব অথবা মূক ও বধির সেজে যাব যাতে কেউ ধরতে না পারে। কিন্তু তবুও বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে তালিবানদের তৈরি করা চৌকিগুলোতে আটকে দেওয়ার ভয়ও হচ্ছিল।’