বাংলাদেশে এখন অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। হিংসা–হানাহানি–লুঠপাট এমনকী অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটছে। তাতে ওপার বাংলা থেকে মানুষজন এপার বাংলায় চলে আসতে চাইছেন। আর তার জেরে বেআইনি অনুপ্রবেশের চেষ্টা বেড়ে গিয়েছে। তবে তা বারবার রুখে দেওয়া হচ্ছে। তাই এখন উত্তরবঙ্গে ৬ জেলার প্রায় ১৯৫ কিলোমিটার সীমান্ত বিএসএফের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে এখন অন্তর্বর্তী সরকার তৈরি হলেও হিংসা সম্পূর্ণ থামেনি। এমন পরিস্থিতির জেরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে একের পর এক সতর্কবার্তা এসেছে। তাতে নজরদারি অনেকটাই বাড়িয়ে তোলা হয়েছে। এখন বিএসএফের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে সেনাবাহিনী।
বিএসএফ সূত্রে খবর, যে দু’একজন বেআইনি পথে অনুপ্রবেশ করেছিল তাদের আটক করে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এখন অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে বিএসএফের সঙ্গে সেনা জওয়ানদের নজরদারি করতে দেখা গিয়েছে। আর সীমান্ত চেকপোস্টগুলিতে সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কোচবিহারের শীতলকুচি এবং জলপাইগুড়ির বেরুবাড়ি এলাকায় বাংলাদেশের বিপুল পরিমাণ মানুষ জড়়ো হয়েছেন। তাই বিএসএফের দু’টি ফ্রন্টিয়ার থেকে নিয়মিত সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছে। যাতে কোনওভাবেই বেআইনি অনুপ্রবেশ না ঘটে।
আরও পড়ুন: সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে নয়া নির্দেশিকা তৈরি নবান্নের, আরজি কর কাণ্ডের জের
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, উত্তরবঙ্গের ৬ জেলা দিয়েই ওপার থেকে এপারে আসা যায়। তাই এই বিরাট জায়গা নিয়ে উদ্বেগে আছেন বিএসএফ জওয়ানরা। এই অংশের বেশিরভাগ জায়গাই নদী এবং জমির সমস্যার জন্য কাঁটাতারের বেড়া নেই। সুতরাং এই জায়গাকেই বেছে নিয়েছেন ওপার বাংলায় সমস্যায় পড়া মানুষজন। তাই আশঙ্কা করা হচ্ছে এই মুক্ত জায়গা দিয়েই ঢুকে পড়তে পারে বাংলাদেশিরা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে যে, শরণার্থীর ছদ্মবেশে জঙ্গি ঢুকে পড়তে পারে। তাই উত্তরবঙ্গের সীমান্তে গঙ্গা, মহানন্দা, ধরলা, পুনর্ভবার মতো নদী ঘেরা সীমান্তে বাড়তি নজর দিতে হবে।
বাংলাদেশে যে সমস্ত মানুষজন আক্রান্ত হচ্ছে তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগ হিন্দু। আর তার সঙ্গে আক্রান্ত হচ্ছেন আওয়ামী লিগের নেতা–মন্ত্রীরা। সম্প্রতি এক যুবনেতা এপারে পালিয়ে আলতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু অবশেষে ধরা পড়ে যান। বিএসএফের নর্থ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের জনসংযোগ আধিকারিক তথা ডিআইজি অমিত ত্যাগী এই বিষয়ে বলেছেন, ‘গোটা সীমান্তেই নজরদারি আঁটোসাঁটো করা হয়েছে। কাঁটাতারের ফেন্সিং নেই যেখানে সেখানে বাড়তি নজরদারি আছে। সীমান্ত সামলাতে বিএসএফ যথেষ্ট সক্ষম। সেনাকেও সমন্বয় করার জন্য রাখা হয়েছে। প্রয়োজন পড়লে সীমান্তে সেনাও বিএসএফের সঙ্গে কাজ করবে। কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, উত্তর দিনাজপুর, মালদা এবং দক্ষিণ দিনাজপুরে বাংলাদেশ সীমান্ত আছে।