সিট কনফার্মড। কোচ রিজার্ভড। কিন্তু তার পরও হয়রানি থেকে নিস্তার নেই। এক্সপ্রেস ট্রেনের মধ্যে এমন ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয়েছে নাট্যগোষ্ঠীর সদস্যদের। কুম্ভমেলা উপলক্ষ্যে দেশজুড়ে এখন বাড়তি সংখ্যক বিশেষ ট্রেন চালানো হচ্ছে। কিন্তু তারপরও এমন ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। একাধিক দূরপাল্লার ট্রেনের সংরক্ষিত কামরায় যাত্রীদের উপর হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। রেলের নিয়ম মেনে আগাম টিকিট কাটা থেকে শুরু করে সংরক্ষিত কামরায় আসন নেওয়ার পরও এক শ্রেণির বেপরোয়া যাত্রীদের দখল এবং হুমকির সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এমনটা যে ঘটতে পারে তা কেউ কল্পনাও করেননি। ইন্দোর থেকে ফেরার পথে তেমনই অভিজ্ঞতা হল যাত্রীদের। শিপ্রা এক্সপ্রেসের বাতানুকূল সংরক্ষিত কামরায় তখন যাত্রীদের উপস্থিতি ভালই ছিল। আর সেখানেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হল দমদম বিশ্বরূপম নাট্যগোষ্ঠীর সদস্যদের। তাঁরা নাট্যোৎসব থেকে ফিরছিল। ওই দলের ২৫ জন সদস্য শনিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ শিপ্রা এক্সপ্রেসের এম–১ (থ্রি–এসি) কামরায় ওঠেন। আর রবিবার সকালে শিপ্রা এক্সপ্রেস পাথারিয়া স্টেশনে পৌঁছলে ওই কামরায় কয়েকজন যাত্রী জোর করে উঠে পড়ে। তখন নাট্যদলের কয়েকজন সদস্যর ল্যাপটপ, ব্যাগ, বাদ্যযন্ত্র, নাটকে ব্যবহৃত সামগ্রী খোয়া যায় বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: ‘আমাদের এখানে জয় বাংলা স্লোগান আছে এবং থাকবে’, বাংলাদেশের প্রসঙ্গ তুলে সরব মমতা
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। এমন ঘটনা কেন ঘটবে সংরক্ষিত কামরায়? উঠছে প্রশ্ন। রেলে এই বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েও কোনও সুরাহা মেলেনি। তবে চিৎকার থেকে প্রতিবাদ জারি ছিল। তবে ট্রেন প্রয়াগরাজ স্টেশনে পৌঁছলে রেলরক্ষী বাহিনীর কর্মীরা ওই কামরায় যাত্রীদের তুলে দেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনা দেখে আপত্তি তোলেন কনফার্ম টিকিটের যাত্রীরা। তার জেরে তাঁদের ব্যাপক হেনস্থা এবং গালিগালাজ করা হয় বলে অভিযোগ। এখানেই শেষ নয়, গোমো স্টেশনে পৌঁছলে ১২ জনের একটি দল ট্রেনে উঠে লাঠি দিয়ে নাটকের দলের সদস্যদের মারতে যায় বলেও অভিযোগ।
এই ১২ জনের দলকে আবার রেলের অনেকেই চেনেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যার জন্য তারা কাউকে পরোয়া করে না। যাত্রীদের হেনস্থা থেকে লুঠপাট অবাধেই করে চলে বলে অভিযোগ। জোর করে সংরক্ষিত কামরায় উঠে গেলেও টিকিট পরীক্ষক এদের কিছুই বলে না বলে যাত্রীদের অভিযোগ। আর এসব অত্যাচার সহ্য করে সোমবার ওই নাটকের দলের সদস্যরা হাওড়া জিআরপিতে লিখিত অভিযোগ জানান। রেল সূত্রে খবর, ওই অভিযোগ সংশ্লিষ্ট জিআরপিতে পাঠানো হয়েছে। এই বিষয়ে ওই নাট্যগোষ্ঠীর সদস্য তথা অভিনেতা সুদীপ্ত দাস বলেন, ‘সম্ভাব্য সব উপায়ে রেলের কাছে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি। টিকিট কেটে সংরক্ষিত কামরায় উঠেও চরম হেনস্থা হতে হল।’