দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান হল অবশেষে! শুরু হয়ে গেল ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, সবকিছু পরিকল্পনা মাফিক এগোলে আগামী বর্ষার আগেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ শেষ হয়ে যাবে।
ঘাটাল মহকুমা সেচ দফতরের আধিকারিক উজ্জ্বল মাখালকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে, 'চলতি বছরের বর্ষার আগেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের প্রাথমিক কাজ শেষ করা হবে। তাই, জোরকদমে চলছে স্লুইস গেট থেকে গার্ডওয়াল তৈরির কাজ। খুব শীঘ্রই দু'টি পাম্প হাউসের কাজও শুরু হয়ে যাবে।'
প্রত্যেক বর্ষায় ঘাটাল-সহ আশপাশের এলাকাকে জলবন্দি হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে ইতিমধ্যেই গার্ডওয়াল নির্মাণের প্রাক-প্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে, প্রস্তাবিত স্লুইস গেট নির্মাণের কাজও শুরু করা হয়েছে।
সম্প্রতি ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের জন্য ২,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের তরফে সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পরই রাজ্যের অর্থ দফতরের পক্ষ থেকে সেচ দফতরকে সেই টাকা বরাদ্দ করা হয়।
এই ২,০০০ কোটি টাকার মধ্যে শুধুমাত্র গার্ডওয়াল নির্মাণের জন্যই বরাদ্দ করা হয়েছে ৬৫ কোটি টাকা। সেচ দফতর সূত্রে খবর, ঘাটাল শহরের মধ্যে দিয়েই প্রবাহিত হয়েছে শিলাবতী নদী। এই নদীর বাঁদিকের পাড় বরাবর প্রায় ৩.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি গার্ডওয়াল তৈরি করা হবে।
ইতিমধ্যেই একটি বেসরকারি ঠিকাদার সংস্থাকে এই কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে। তারা গার্ডওয়াল তৈরির জন্য মাটি পরীক্ষার কাজও শুরু করে দিয়েছে। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, প্রকল্প এলাকার মোট ১৩টি জায়গায় গর্ত খোঁড়া (বোরিং) হচ্ছে। প্রায় ১০০ ফুট নীচে থেকে মাটির নমুনা সংগ্রহ করে তা সেচ দফতরে পাঠানো হবে। সেচ দফতর সেই মাটির নমুনা পরীক্ষা করে ফলাফল জানালেই গার্ডওয়াল নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে যাবে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গার্ডওয়াল না থাকাতেই বর্ষার ভরা মরশুমে শিলাবতী উপচে বৃষ্টি ও নদীর জল বসত এলাকায় ঢুকে পড়ে। এই প্লাবন রুখতে প্রস্তাবিত গার্ডওয়ালের উচ্চতা করা হবে ৫ ফুট।
তবে, গার্ডওয়াল নির্মাণের আগে প্রকল্প এলাকা থেকে জবরদখলকারীদের সরাতে হবে। অভিযোগ, এই এলাকায় এত দিন ধরে সেচ দফতরের জমি দখল করে বহু নির্মাণকাজ করা হয়েছে। এমন অবৈধ নির্মাণের সংখ্যা প্রায় হাজার খানেক। তাদের সকলকেই ওই দখলদারি ছেড়ে দেওয়ার জন্য সেচ দফতরের পক্ষ থেকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
এর পাশাপাশি, ঘাটাল শহরের ৩ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে দু'টি হেভি পাম্প হাউস বসানো হবে। তার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৩১ কোটি টাকা। যেখানে এই পাম্প হাউস দু'টি নির্মাণ করা হবে, সেই জায়গাও চিহ্নিত করা হয়ে গিয়েছে বলে সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। শুরু করা হয়েছে টেন্ডার প্রক্রিয়াও। ফলত, নির্মাণকাজও খুব শীঘ্রই শুরু করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সেচ কর্তারা।
সব মিলিয়ে জোরকদমে চলছে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া। সবকিছু ঠিক মতো সারা হচ্ছে কিনা, সেই বিষয়ে তদারকি করতে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি ঘাটাল পুরসভার টাউন হলে মাস্টার প্ল্যানের কাজ খতিয়ে দেখতে ফের একবার বৈঠকে বসবে সংশ্লিষ্ট মনিটরিং কমিটি।