রাজ্যে ফ্লেক্স–ব্যানারের রাজনীতি অব্যাহত। এখন কেউ মুখে কথা বলছেন না। বরং ফ্লেক্স–ব্যানারের মধ্য দিয়ে বার্তা দেওয়ার ট্রেন্ড রাজ্য–রাজনীতিতে দেখা দিয়েছে। কৃষ্ণনগরের পর এবার রানাঘাট। বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে শাসক দলের নেতাদের পদ্ম যোগের সম্ভাবনা উস্কে দিয়ে পড়ছে পোস্টার–ফ্লেক্স। রানাঘাটের প্রাক্তন বিধায়ক তথা প্রাক্তন পুরপ্রধান পার্থসারথম চট্টোপাধ্যায়ের নামেও এবার ফ্লেক্স দেখা গেল রানাঘাট শহরের আনাচে–কানাচে।
সম্প্রতি কৃষ্ণনগর শহরে পোস্টার দেখা গিয়েছিল সেখানকার তৃণমূলের নেতাদের বিজেপিতে না নেওয়ার বার্তা দিয়ে। সেখানে কারও নাম না থাকলেও পুরপ্রধান এবং দত্ত পদবির নেতার উল্লেখ ছিল। এবার রানাঘাটে একাধিক ফ্লেক্সে পুর–প্রশাসক পার্থসারথি ওরফে বাবুর নাম এবং ছবি রয়েছে। তাতে সরাসরি তাঁর বিজেপি যোগের কথা না লিখলেও লেখা হয়েছে, ‘শহর যাতে দুর্নীতিমুক্ত থাকে, তাই আমরা বিজেপি সমর্থনকারীরা বাবু চ্যাটার্জিকে চাই না।’ এই নিয়ে নতুন করে জল্পনার শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯০ থেকে কাউন্সিলর, ১৯৯৫ সালে পুরপ্রধান হয়েছিল পার্থসারথি। তখন অবশ্য তিনি কংগ্রেসে। ২০০৯ সালে তিনি যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলে। ২০১০ সালে নির্বাচনে জিতে ফের পুরপ্রধান হয়েছিসেন। ২০১১ সালে রানাঘাট উত্তর–পশ্চিম বিধানসভায় তাঁকেই প্রার্থী করে তৃণমূল। জিতেও গিয়েছিলেন। তবে পাঁচ বছর পরে কংগ্রেসের শঙ্কর সিংয়ের কাছে হেরে যান পার্থ।
সূত্রের খবর, রানাঘাট জুড়ে শাসকদলের নেতাদের একাংশের সঙ্গেও পার্থসারথির সম্পর্ক ভালো নয়। দলের সাম্প্রতিক সাংগঠনিক রদবদলে রানাঘাটে দলীয় সংগঠনে গুরুত্ব বেড়েছে তাঁর বিরোধী শিবিরের নেতাদের। এমনকী বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের সম্মেলনে ডাক পাননি পার্থ। পরের কয়েকটি কর্মসূচিতে অবশ্য তাঁকে ডাকা হচ্ছে। আগামী শনিবার রানাঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর সম্ভাব্য সভার জন্য মাঠ পরিদর্শনেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। তবে তিনি তলে তলে গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন বলে একাংশের দাবি।
ডিসেম্বর মাসেই রানাঘাট শহরে শুভেন্দু অধিকারীর সমর্থনে যে পোস্টার পড়ে, তার নীচে লেখা ছিল রানাঘাট পুরসভা। ফের শহরের প্রাক্তন বিধায়ক এবং প্রাক্তন পুরপ্রধানকে নিয়ে এই ফ্লেক্সে অন্য রাজনীতির গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে বলে খবর। এখন প্রশ্ন উঠছে, পার্থসারথি কি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন? নাকি দলের মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট করে তাঁকে কোণঠাসা করার চেষ্টা?
যদিও পার্থসারথির বক্তব্য, ‘রানাঘাটে ফেসবুকে এবং পোস্টারে এই ধরনের কুরুচিকর কাজকর্ম চলছে। আমি গুরুত্ব দিতে চাই না।’ আর জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র বাণীকুমার রায় বলেন, ‘এই সব বিজেপিরই কাজ।’ এই পোস্টার–ফ্লেক্স–ব্যানার নিয়ে রাজনীতি এখন তুঙ্গে।