কৃষ্ণনগরে যাতায়ত বাড়ছে রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার। শুক্রবার রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে কৃষ্ণনগর গিয়েছিলেন জয়প্রকাশ। শনিবার ফের সেখানে দেখা যায় তাঁকে। এবার তিনি সঙ্গ দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। শনিবার নদিয়া জেলার পুলিশ সুপারের দফতরে গিয়েছিলেন বিজেপির বেশ কয়েকজন বিধায়ক। নেতৃত্বে ছিলেন শুভেন্দু। সেখানেই উপস্থিত ছিলেন জয়প্রকাশ। আর জয়প্রকাশের এভাবে মুহুর্মুহু কৃষ্ণনগর যাওয়া নিয়েই বিজেপির অন্দরে শুরু হয়েছে গুঞ্জন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে যে যদি কৃষ্ণনগর আসনে উপনির্বাচন হয়, তাহলে সেই আসন থেকে বিজেপির টিকিটে দাঁড় করানো হতে পারে জয়প্রকাশকে। ইতিমধ্যেই মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজ করার আবেদন জানিয়ে অধ্যক্ষের কাছে দ্বারস্থ হয়েছেন শুভেন্দু। তবে মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজ হবে কি না, বা মুকুল নিজে সেই পদ থেকে পদত্যাগ করবেন কি না, এর কোনওটাই এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এরই মাঝে কৃষ্ণনগরে বিজেপির নয়া মুখ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে জয়প্রকাশ মজুমদারকে।
কৃষ্ণনগরে জয়প্রকাশকে মুখ হিসেবে তুলে ধরার পিছনে যুক্তি রয়েছে বিজেপি নেতৃত্বের। গেরুয়া শিবিরের বক্তব্য, জয়প্রকাশ কৃষ্ণনগরের ভূমিপুত্র। সেখানেই তাঁর পড়াশোনা, বেড়ে ওঠা। বিধানসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগর উত্তর থেকে প্রার্থী হওয়া কথা থাকলেও পরে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পরিকল্পনার ফলে সরে দাঁড়ান জয়প্রকাশ নিজে। উল্লেখ্য, এর আগে ১৯৫৭ সালে জয়প্রকাশের বাবা জগন্নাথ মজুমদার কৃষ্ণনগর আসন থেকে কংগ্রেসের বিধায়ক হয়েছিলেন ১৯৫৭ সালে।
এদিকে এই বিষয়ে জয়প্রকাশ নিজে বেশ বিনয়ী। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, 'আমি কৃষ্ণনগরের ভূমিপুত্র। এই জায়গার সংগঠন মজবুত করার কাজ আমি আগেও করেছি। এখনও সেই কাজ করছি। আর আমাদের দলে প্রার্থী পদ এভাবে মেলে না। এটা পুরোপুরি দলের উপর নির্ভরশীল। এই বিষয়ে নেতৃত্বের সঙ্গে এখনও আণার কোনও কথাও হয়নি।'
সূত্রের খবর, বিধানসভা নির্বাচন ঘনিয়ে আসতে কৃষ্ণনগরে সংগঠন মজবুত করার কাজ শুরু করেছিলেন জয়প্রকাশ। প্রার্থীপদ প্রায় নিশ্চিত ছিল সেই সময়। তবে পরে মুকুলকে বেছে নেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এর আগে ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের সময় কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা এলাকায় ৫৩ হাজার ৫৫১ ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি। সেই ব্যবধানের কথা মাথায় রেখেই মুকুল কৃষ্ণনগরে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন বলে জানা যায় সূত্র মারফত। আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও সেই দাবি মেনে নেন। এদিকে কৃষ্ণনগর উত্তরের বদলে জয়প্রকাশকে করিমপুর থেকে প্রার্থী করতে চেয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয় দলের তরফে। তবে সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে জয়প্রকাশ বলেছিলেন তিনি নির্বাচনে না লড়ে দলের অন্য কাজে হাত লাগাবেন।
উল্লেখ্য, এর আগে মহুয়া মৈত্র করিমপুর আসনের বিধায়ক ছিলেন। পরে তিনি সেই পদ থেকে পদত্যাগ করে সাংসদ হন। সেই সময় করিমপুর আসনের উপনির্বাচনে বিজেপির টিকিটে ভোটে লড়েছিলেন জয়প্রকাশ। হেরেছিলেন ২৪ হাজার ভোটে। ভোটের দিন খেতে হয়েছিল লাথি।