সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে জলপাইগুড়িতে বিজেপির জীর্ণ অবস্থাটা ক্রমেই সামনে আসতে শুরু করছে। একদিকে জেলা সভাপতির পদকে কেন্দ্র করে ক্রমেই দলের অন্দরে নানা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। তার মধ্যেই দল সূত্রে খবর, জলপাইগুড়িতে সীমান্তবর্তী এলাকায় একাধিক পঞ্চায়েত এলাকায় প্রার্থীই খুঁজে পাচ্ছে না বিজেপি। জেলায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা তৈরি করেছে জেলা বিজেপি। সেখানে সীমান্ত এলাকায় প্রায় ৩০০টি ঘরে কোনও নাম লেখা নেই। মোটামুটি হিসাব বলছে এই আসনগুলিতে আসলে কেউই প্রার্থী হতে চাইছেন না। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ।
এদিকে আগামী বৃহস্পতিবারই বিজেপির রাজ্য কমিটির বৈঠক। সেখানেই এই তালিকা জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু এখন দলের রাজ্য নেতাদের কাছে মান রক্ষা করাটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, একটা সময় জলপাইগুড়ির সীমান্ত এলাকায় ফরওয়ার্ড ব্লকের ভালো সংগঠন ছিল। পরবর্তী সময়ে সেখানে বিজেপি সংগঠন গড়তে শুরু করে। কিন্তু গত কয়েক বছরে সেই সংগঠনের ধস নামতে শুরু করেছে। সূত্রের খবর রাজগঞ্জ. জলপাইগুড়ি সদর, ধূপগুড়ি. ময়নাগুড়ি সহ জলপাইগুড়ির বিভিন্ন এলাকায় কার্যত প্রার্থীই খুঁজে পাচ্ছে না বিজেপি। সেক্ষেত্রে বর্তমান পরিস্থিতিতে কীভাবে সামাল দেওয়া সম্ভব তা ভেবে কূল পাচ্ছেন না দলের জেলা নেতৃত্ব।
কিন্তু সীমান্ত এলাকায় কেন এভাবে ধস নামল? কেন পঞ্চায়েতের মুখ এভাবে জলপাইগুড়িতে বড় বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়াল জলপাইগুড়ি? অনেকের মতে এনআরসি সংক্রান্ত ক্ষেত্রে এবার বিভ্রান্ত সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা। গত লোকসভা নির্বাচনে এই এনআরসির ধুয়ো তুলেই ভোট বৈতরনী পার করে দিয়েছিল বিজেপি। এদিকে ভোট মিটে যেতেই আর তা নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য নেই। সেকারণেই এবার বিজেপির হয়ে এবার আর ভোটে লড়ার মতো লোক পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ ভোটে দাঁড়ালেই সেই এনআরসির প্রসঙ্গে আসতে পারে। আর তা নিয়ে জলপাইগুড়ি বিজেপির কাছে নয়া সমস্যা দেখা দিয়েছে।
এদিকে এর সঙ্গেই সীমান্ত এলাকার মানুষের মধ্যে একটি ভয় জাঁকিয়ে বসেছে। অনেকেই ভাবছেন এনআরসি হলে হয়তো দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে। সেই আশঙ্কাতেই বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন অনেকেই।
তবে বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য় এই ধরনের অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁদের দাবি তৃণমূলের লাগাতার সন্ত্রাসের জেরেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে সূত্রের খবর, সংগঠনের পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে কর্মসূচি নিলেও লোক পাওয়া যাচ্ছে না।