বিজয়া দশমীর রাতে তিন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করেছিল প্রেমিক। আর বন্ধুদের সামনেই প্রেমিকার সঙ্গে সহবাস করতেও চেয়েছিল প্রেমিক। এই প্রস্তাবকে মুখের উপর নাকচ করে দেওয়ায় প্রেমিকাকে ঠেলে জলে ফেলে দিয়েছিল প্রেমিক। প্রেমিকা সাঁতার জানত না। তাই জলে ডুবে মৃত্যু হয় প্রেমিকার। এখানে কোনও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। হুগলির জাঙ্গিপাড়ায় কিশোরীর রহস্যমৃত্যু নিয়ে আজ এমনই দাবি করেছে পুলিশ। তবে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঠিক কী দাবি করেছে পুলিশ? আজ, সোমবার হুগলির পুলিশ সুপার অমনদীপ সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘গত ৫ তারিখ জাঙ্গিপাড়ায় যে মেয়েটির মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে তাতে তার ময়নাতদন্তে কোনরকম ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রেমের সম্পর্ক ছিল সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রীর। দশমীর রাতে প্রেমিকের ডাকেই পুকুর পাড়ে গিয়েছিল ওই কিশোরী।সাইকেল চালিয়ে ডাকাতিয়া খালের পাশ দিয়ে শ্রীহট্ট গ্রামের একটি পুকুরের পাড়ে তার সঙ্গে দেখা করে নাবালিকা। সেখানে নাবালিকার সঙ্গে সহবাস করতে চায় প্রেমিক। কিন্তু মেয়েটি তাতে বাধা দেয়। তখন প্রেমিক তার তিন বন্ধুকে ডাকে। তারা সকলে মিলে মেয়েটির সঙ্গে অসভ্যতা করতে চেষ্টা করে। তখন আপত্তি করতেই মেয়েটিকে পুকুরে ঠেলে ফেলে দেয় প্রেমিক। তার জেরে জলে ডুবে মৃত্যু হয় তার। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে ধর্ষণের প্রমাণ মেলেনি।’
আর কী জানা যাচ্ছে? পুলিশ সূত্রে খবর, মেয়েটির গায়ে কোনওরকম জোর করে আঘাত করার চিহ্ন নেই। পাশাপাশি পায়ে একটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে যা পড়ে গিয়ে লাগতে পারে। এদিন অভিযুক্তদের শ্রীরামপুর আদালতে তোলা হয়। পুলিশ সুপার অমনদীপ বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে কয়েক কিলোমিটার দুরে বিশেষ সুত্রে খবর পেয়ে হরিপাল থানার একটি এলাকা থেকে এদের গ্রেফতার করা হয়। মেয়ের হত্যায় অভিযুক্ত চারজনের গ্রেফতারের খবরে কিশোরীর মা বলেন, ‘অপরাধীদের শাস্তি হোক। তারা আত্মীয় বা যেই হোক। আমরা এটাই চাই।’
তদন্তে কী উঠে এসেছে? এই ঘটনার সময় চারজনই মদ্যপ অবস্থায় ছিল। তাদের বিরুদ্ধে খুন, অপহরণ এবং পকসো মামলার নানা ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কারণ নিখোঁজ ছিল ওই নাবালিকা। পরিবারের সদস্যরা জাঙ্গিপাড়া থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করে। এই ঘটনায় কোনও পুলিশকর্মীর গাফিলতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিশোরীর সাইকেলটির এখনও খোঁজ মেলেনি বলে সূত্রের খবর।