বাংলা নিউজ > বাংলার মুখ > অন্যান্য জেলা > জঙ্গিপুরের পুলিশ সুপার হঠাৎ সাইকেল নিয়ে হাজির, রাতের অন্ধকারে কীসের খোঁজ?

জঙ্গিপুরের পুলিশ সুপার হঠাৎ সাইকেল নিয়ে হাজির, রাতের অন্ধকারে কীসের খোঁজ?

জঙ্গিপুরের পুলিশ সুপার ভিজি সতীশ পশুমার্থী।

তারপর এতটা রাস্তা সাইকেল চালিয়ে আসা—সব মিলিয়ে একটু রাতই হয়েছিল। তবে বেশি রাত নয়। থানার পুলিশ অফিসাররা কতটা কর্মতৎপর তা দেখতেই এই সাইকেলে সফর। আগামী দিনেও এমন একাধিক থানায় তিনি সারপ্রাইজ ভিজিট করবেন বলে জানান। আসলে রাতের এমন সময়ে শুটআউট থেকে বোমাবাজি হয়ে থাকে। তিনি নিজেই রাতে টহল দিতে বেরিয়ে পড়েন। 

তখন রাত হয়েছে। হঠাৎ সাইকেল নিয়ে থানায় হাজির জঙ্গিপুরের পুলিশ সুপার। থানায় কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা এভাবে পুলিশ সুপারকে দেখে চক্ষু চড়কগাছ। পুলিশকর্মীরা হতভম্ব হয়ে চোখ রগড়াতে ব্যস্ত। সত্যি দেখছেন কিনা, নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না। গাড়ি থাকতে সাইকেলে রাতের অন্ধকারে থানায় কেন পুলিশ সুপার?‌ মুখে আসলেও কেউ এই প্রশ্ন করতে পারছেন না। পরনে পুলিশের উর্দিও ছিল না। সূতি থানায় তখন পুলিশকর্মীরা কী করবেন বুঝতে পারছেন না। এভাবেই সারপ্রাইজ ভিজিট করলেন জঙ্গিপুরের পুলিশ সুপার ভিজি সতীশ পশুমার্থী।

ঠিক কী হল থানায়?‌ পুলিশ সূত্রে খবর, কেমন চলছে থানার কাজ? মানুষ পরিষেবা কি ঠিকঠাক পাচ্ছেন? কর্মীরাই বা কে, কী করছেন? এসবই ছিল পুলিশ সুপারের প্রশ্ন। তবে তাঁকে যথাযথ উত্তর দেওয়া হয়েছে। রাতের অন্ধকারে এমন অমাইক পুলিশ সুপারের সান্নিধ্য পেয়ে সকলেই হতবাক। সাধারণ পোশাকে ৩৫ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে পুলিশ সুপারের এমন থানা ভিজিট বিরল। আগে কোথায় ঘটেছে তা কেউ মনে করতে পারছেন না। প্রথমে বিষয়টি বুঝতে পারেননি অনেকেই। আর যখন বুঝেছেন তখন চাপে পড়ে গিয়েছেন সবাই। কিন্তু তার জন্য পুলিশ সুপার কাউকে বকাঝকা করেননি। বরং মুচকি হেসে বাহবা দিয়েছেন। রাতে না ঘুমিয়ে কর্তব্যে অবিচল থাকার জন্য।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ স্থানীয় এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতেই তিনি এই সারপ্রাইজ ভিজিট করেন। সন্ধ্যেবেলায় বেরিয়ে ছিলেন পুলিশ সুপার ভিজি সতীশ পশুমার্থী। রাস্তায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তারপর এতটা রাস্তা সাইকেল চালিয়ে আসা—সব মিলিয়ে একটু রাতই হয়েছিল। তবে বেশি রাত নয়। থানার পুলিশ অফিসাররা কতটা কর্মতৎপর তা দেখতেই এই সাইকেলে সফর। আগামী দিনেও এমন একাধিক থানায় তিনি সারপ্রাইজ ভিজিট করবেন বলে জানান। আসলে রাতের এমন সময়ে শুটআউট থেকে বোমাবাজি হয়ে থাকে। তাই তিনি নিজেই রাতে টহল দিতে বেরিয়ে পড়েন। যদিও তেমন কোনও ঘটনা ঘটেনি।

কেমন করে জনসংযোগ করলেন?‌ প্রথমে তিনি দোকানে বসে চা পান করেন। পুলিশ সুপার পরিচয় গোপন রেখেই সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। তারপর সাইকেল চালিয়ে নানা জায়গা এবং অবশেষে থানায় আসেন। এই গোটা প্রক্রিয়াটিতে অনেকেই জানতে পারেননি তিনি পুলিশ সুপার ভিজি সতীশ পশুমার্থী। আর যাঁরা জানতে পেরেছেন তাঁদের প্রকাশ করতে নিষেধ করেছেন। তবে এই ঘটনায় এলাকার সাধারণ মানুষজন খুব খুশি। কারণ তাঁদের নিরাপত্তার জন্য যে পুলিশ সুপার এমন উদ্যোগ নিয়েছে সেটা আগে কাউকে করতে দেখা যায়নি। এই বিষয়ে পুলিশ সুপার ভিজি সতীশ পশুমার্থী বলেন, ‘‌এলাকার অবস্থা কেমন দেখার জন্যই সাইকেল নিয়ে বেড়িয়েছি। সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেখা করেছি, কথা বলেছি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখাই আমার কাজ। এভাবে মানুষকে আশ্বাস দিতে চাই যে পুলিশ তাঁদের পাশে আছে। মানুষকে রক্ষার দায়িত্ব পুলিশেরই।’‌

বন্ধ করুন