সমতলে গরম সামান্য কমেছে। কিন্তু দিনের বেলায় রোদের যা তেজ তাতে একেবারে প্রাণ বেরিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। সেই অবস্থা থেকে সাময়িক রেহাই পেতে অনেকেই এখন দার্জিলিংমুখী। লাগেজ গুছিয়ে চেপে বসছেন দার্জিলিং মেলে। কিন্তু দার্জিলিং শহরে তো একেবারে উপচে ওঠা ভিড়। অনেকেই চাইছেন একটু নির্জনে কয়েকটা দিন কাটিয়ে দিতে। সেক্ষেত্রে আপনি এবার ঘুরে আসতে পারেন বিজনবাড়ির কাছেই ঝেপি বা ঝেঁপি থেকে।
নামটা অতটা মিষ্টি নয়, কিন্তু রূপে গুণে একেবারে অপরূপ এই পাহাড়ি কন্যা। দার্জিলিং আর সিকিমের জোড়থাংয়ের মাঝামাঝি বিজনবাড়ি ব্লকের এই ছোট্ট গ্রাম ঝেঁপি। প্রকৃতি যেন উজাড় করে দিয়েছে এখানে।
শিলিগুড়ি থেকে ঝেপির দূরত্ব প্রায় ১১৫ কিমি। এনজেপি থেকে সরাসরি ঝেপি যাওয়ার গাড়ি ভাড়া করতে পারেন।। অন্যদিকে অনেকে দার্জিলিংয়ে একদিন কাটিয়ে চলে যেতে চান ঝেপিতে। দার্জিলিং শহর থেকে ঝেপির দূরত্ব মাত্র ৩৫ কিমি।
একেবারে নির্জন নিরিবিলিতে যদি আপনি দিন দুয়েক কাটাতে চান তবে ঝেপি হবে একেবারে আদর্শ জায়গা। এখানে ফার্ম হাউজ রয়েছে। সেখানেও অনেকে থাকেন। একাধিক হোম স্টেও গড়ে উঠছে। পাশ দিয়েই বয়ে চলেছে ছোট্ট পাহাড়া ঝোরা। তারপাশেই থাকার ব্যবস্থা। সেই পাহাড়ি ঝোরার পাথরের উপর বসে থাকতে পারেন দিনভর। চারপাশে পাহাড়ের সারি। পাতা পড়ার আওয়াজও শুনতে পাবেন আপনি।
জীবনে অনেক কিছুই তো না পাওয়া থাকে। আফশোসও কিছু কম থাকে না। কিন্তু এখানে এলে দেখবেন মনে হবে সত্যিই হয়তো, সব পেলে নষ্ট জীবন। চারপাশে পাহাড়, ঝিঁঝি পোকার ডাক, ঝরনার শব্দ, নাম না জানা পাখির ডাক সব মিলে মিশে যেন অন্যরকম ব্যাপার।
বিজনবাড়ি থেকে প্রায় ৯ কিমি দূরের এই নির্জন পাহাড়ি গ্রাম। জনা কয়েক বাসিন্দার বাস এখানে। অনেকে পাখি দেখার জন্যও ঝেপিতে আসেন। অনেকে ঝেপিতে দুদিন কাটিয়ে চলে যান দার্জিলিংয়ে। এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত এখানে বেশ ভালো লাগবে। সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্তও অনেকে ঝেপি বেড়াতে যান।
তবে বর্ষাকালে ঝেপি যেন অন্যরকম সুন্দরী। হোমস্টের বারান্দা থেকে আপনি তাকিয়ে দেখুন চারপাশটা। রিমঝিম বৃষ্টি। তার মাঝে চারদিকে সবুজে সবুজে। দিগন্ত বিস্তৃত চা বাগান। এখান থেকে কাছেই রয়েছে একটি প্রাচীন মন্দির। পাহাড়ের কোলে ছোট্ট মন্দির। চারপাশে কেউ কোথাও নেই। নির্জন পাহাড়ি মন্দির। ঝেপি থেকে মিনিট দশেকের ট্রেকিং করে চলে যেতে পারেন সেই মন্দিরে। শিব, গণেশ, হনুমানজীর বিগ্রহ এই নির্জন জায়গায় যেন অন্যরকম।
এখান থেকে কাছেই আছে বিজনবাড়ি। সেখানেও চলে যেতে পারেন। অনেকে আবার এখানে একদিন কাটিয়ে চলে যান দার্জিলিংয়ে। মনটা অনেকটা হাল্কা লাগবে।
কীভাবে যাবেন?
দার্জিলিং থেকে ঝেপি আসতে গেলে অনেক ভাড়ার গাড়ি পাবেন। আবার এনজেপি থেকে সরাসরি গাড়িতে চলে আসতে পারেন সুন্দরী গ্রাম ঝেপি।