চাকরি দেওয়ার নামে সাধারণ মানুষের থেকে যে কোটি কোটি টাকা জীবনকৃষ্ণ সাহা তুলেছিলেন, তার সন্ধান পেতে এবার বিধায়কের আটটি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করল সিবিআই। জানা গিয়েছে, ফ্রিজ করা অ্যাকাউন্টের মধ্যে ৫টি বেসরকারি ও ৩টি সরকারি ব্যাঙ্কে। এই সব ব্যাঙ্কের সংশ্লিষ্ট শাখাকে চিঠি দিয়েছে সিবিআই। অবিলম্বে এই অ্যাকাউন্টগুলির লেনদেন বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জীবনকৃষ্ণর ৮টি অ্যাকাউন্টের মধ্যে ৭টি মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন শাখায়। বীরভূমের সাঁইথিয়ায় বেসরকারি ব্যাঙ্কের শাখায় তাঁর একটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এই প্রতিটি অ্যাকাউন্টের লেনদেন খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। অ্যাকাউন্টগুলিতে মোট ১ কোটি টাকা রয়েছে বলে সূত্রের খবর। প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতিতে যে কোটি কোটি টাকা জীবনকৃষ্ণ আত্মস্যাৎ করেছেন, তার হিসেব পেতে মরিয়া সিবিআই। এর জন্য জীবনকৃষ্ণর পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী টগরি সাহার অ্যাকাউন্টের দিকেও নজর রয়েছে তদন্তকারীদের। (আরও পড়ুন: অবশেষে মিলল কলকাতায় বৃষ্টির আভাস, শহরে কবে নাগাদ নামবে স্বস্তির বর্ষণ?)
প্রসঙ্গত, টানা তিনদিন ধরে চলা তল্লাশি শেষে গতপরশু গ্রেফতার করা হয় বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। এই জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর নথি। এদিকে বিধায়ক পুকুরে যে দু'টি ফোন ফেলেছিলেন, সেগুলিও উদ্ধার হয়েছে। তল্লাশি চলাকালীন বিধায়কের বাড়ির কাছে উদ্ধার হয়েছে ৫ ব্যাগ ভরতি নথি। প্রায় সাড়ে ৩ হাজার পাতার সেই নথি চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শুধুমাত্র মুর্শিদাবাদ নয়, অন্যান্য জেলার চাকরিপ্রার্থীদেরও নাম সেই তালিকায় ছিল বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ জীবনকৃষ্ণের বড়ঞার বাড়িতে গিয়ে তাঁকে জেরা শুরু করেছিলেন সিবিআই-এর তদন্তকারীরা। শুরু হয় তল্লাশি। এরই মাঝে বিকেল নাগাদ বিধায়ককে পাঁচিল টপকে পালানোর চেষ্টা করতে দেখা যায়। যদিও বাড়ির বাইরে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা তাঁকে ধরে ফেলেন। তবে বাড়ির পাশের পুকুরে জীবনকৃষ্ণ ছুঁড়ে ফেলেছিলেন নিজের দু'টি ফোন। পরবর্তীতে জেসিবি আনিয়ে এবং লোক নামিয়ে একটি ফোন উদ্ধার করে সিহিআই। তবে অপর ফোনটি পাওয় যায়নি বলে জানা গিয়েছে। তাছাড়াও বিধায়কের বাড়ি থেকে একাধিক কম্পিউটার, বেশ কয়েকটি ল্যাপটপ, তিনটি নোটপ্যাড বাজেয়াপ্ত করেছেন তদন্তকারীরা। তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, অন্তত পক্ষে ৩ হাজার চাকরি প্রার্থী থেকে টাকা নিয়ে নিয়োগ দুর্নীতি করেছিলেন জীবনকৃষ্ণ। এই প্রার্থীদের থেকে ৬ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত টাকা নিয়েছিলেন তিনি। বিধায়ক একাই ৩০০ কোটি টাকার ওপরের দুর্নীতি করে থাকতে পারেন বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।