আর কোনও রাখঢাক রাখলেন না আসানসোলের বিদায়ী মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। গত কয়েকদিনেই শাসকদলের ‘বেসুরো’ নেতাদের মধ্যে নাম লিখিয়েছেন তিনি। এবার দুর্গাপুরে এক দলীয় সভায় সরাসরি পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে আক্রমণ করলেন। একইসঙ্গে গাইলেন শুভেন্দু অধিকারীর গুণগান। জিতেন্দ্রর কটাক্ষ, ‘বাবু ববি হাকিম শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে কথা বলবে, সেটা মানায় নাকি?’
বুধবার ওই দলীয় সভা থেকে ফিরহাদ হাকিমের নাম করেই জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘শুভেন্দু অধিকারী ৬ মাস গুলির সামনে লড়াই করেছে। তার পর নেতা হয়েছে। তাঁর কথা তোমার মুখে মানায় না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুটো কথা বলুক সেটা মানায়। তোমায় মানায় নাকি?’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর তৃণমূলের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলে এদিন দাবি করেন জিতেন্দ্র।
আসানসোলের পুর প্রশাসক এদিন পরিষ্কার বলেন, ‘এটা ঘটনা যে তৃণমূল কংগ্রেসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর সবচেয়ে জনপ্রিয় যে নেতা রয়েছে তা হল শুভেন্দু অধিকারী। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। নেতাদের উচিত ছিল, নিজেদের মধ্যে যে ভুল বোঝাবুঝি রয়েছে তা মিটিয়ে নেওয়া। কিন্তু না, আমাদের মতো ছোট নেতাদের সমস্যাই এরা মেটায় না, শুভেন্দু অধিকারীর সমস্যা কী মেটাবে?’
আসানসোলকে স্মার্টসিটি হিসেবে গড়ে তুলতে টাকা পাঠিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু সেই টাকা আটকে দিয়েছে রাজ্য সরকার— এই অভিযোগ তুলে সম্প্রতি পুরমন্ত্রী চিঠি দিয়েছেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। সে ব্যাপারে এদিন ফিরহাদ হাকিমকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘আসানসোলের মানুষের চাহিদা মতো আমার দফতরের মন্ত্রীকে গোপনে একটা চিঠি দিলাম। আর চিঠি দেওয়ার ফল কী হল? তিনি সঙ্গে সঙ্গে বলে দিলেন, চিঠি দিয়েছো? তোমার জন্য দরজা খোলা আছে। তুমি বিজেপি–তে চলে যাও। চিঠি দিয়েছো? তুমি তো বিজেপি–র হয়ে কথা বলছ।’
ফিরহাদ হাকিম এমন অভিযোগ তোলায় জিতেন্দ্র তিওয়ারিও চুপ থাকেননি। ফিরহাদের বিরুদ্ধে কলকাতাকে মিনি পাকিস্তান বলার অভিযোগ তুলেছেন জিতেন্দ্র। তাঁর কথায়, ‘তখন আমিও বলতে বাধ্য হই, আপনি তো কলকাতায় মিনি পাকিস্তানের কথা বলেছিলেন। আপনি আমাকে জ্ঞান দেবেন? আপনাকে দেখে কখনও তৃণমূল করতে আসিনি। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে দল করি।’
উল্লেখ্য, উত্তপ্ত পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে সম্প্রতি ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন যে জিতেন্দ্র তিওয়ারি তাঁর ভাইয়ের মতো। সেই কথার সূত্র ধরে এদিন আসানসোলের পুর প্রশাসক বলেন, ‘এই ভাই বলেই তো মুশকিল করলেন। আপনি ভাই হলে তো আসানসোল, দুর্গাপুরের মধ্যে ভাগ চাইতে শুরু করবেন। আমরা ভাগ দিতে রাজি নই।’