আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে গোটা রাজ্যজুড়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। নিরাপত্তার দাবি উঠতে শুরু করেছে সর্বত্র। জুনিয়র ডাক্তার থেকে শুরু করে নাগরিক সমাজ রোজ রাজপথে মিছিল, ধরনা করছেন। আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা ঘটার একমাস পেরিয়ে গিয়েছে। তদন্তভার গিয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। তবে তদন্তে নতুন কিছু উঠে এসেছে কিনা সেটা সোমবার সুপ্রিম কোর্টে দেওয়া রিপোর্ট থেকেই স্পষ্ট হবে। এই আবহে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালেই দুর্নীতি ও থ্রেট সিন্ডিকেট থাকার অভিযোগ সামনে আসছে। এখান থেকে এমবিবিএস পাশ করেছিলেন আরজি কর হাসপাতালের নির্যাতিতা।
এদিকে সদ্য সাসপেন্ড হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের চিকিৎসক–নেতা অভীক দে। তাঁর ছত্রচ্ছায়াতেই এই দুর্নীতি বেড়েছিল বলে অভিযোগ। কদিন আগেই অভীকের বিয়ের ছবি সামনে আসে। সেখানে দেখা যায়, বিয়েতে হাজির হয়েছিলেন জেএনএমের তৎকালীন অধ্যক্ষ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, দুই প্রাক্তনী শুভঙ্কর ঘোষ ও ফিরোজ ই আব্বাস, ওখানের ছাত্র শেখ মহম্মদ অখিল এবং আরজি কর হাসপাতালের সিনিয়র রেসিডেন্ট (রেডিয়োথেরাপি) সৌরভ পাল। ২০২০ সালে জেএনএম থেকে এমবিবিএস পাশ করে বেরোন শুভঙ্কর এবং ফিরোজ। সুতরাং এখানকার দুর্নীতির সঙ্গে অভীক ও তাঁর সহকর্মীদের যোগ থাকতে পারে বলে অভিযোগ উঠছে।
আরও পড়ুন: ‘এই ধরনের মানুষদের মনোনয়ন দেওয়াই ঠিক নয়’, জহর সরকারকে নিয়ে রায় দিলেন সৌগত
জেএনএম সূত্রে খবর, অভীক বরাবরই বাড়তি উৎসাহ দেখাতেন কল্যাণীর এই হাসপাতাল নিয়ে বলে অভিযোগ। আর নিজের সহকর্মীদের মাধ্যমেই জেএনএম হাসপাতালে কর্তৃত্ব কায়েম রেখেছিলেন অভীক দে। এখানে একটা চক্র তৈরি করেছিলেন অভীক বলেও অভিযোগ অনেকের। নানা উপায়ে এই হাসপাতাল থেকে টাকা তোলার চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছিল। যার বকলমে অভীক ও তাঁর অ্যাসোসিয়েটরাই সব নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে অভিযোগ। অভীকদের মদতেই এখানে প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন পিজিটি শেখ অখিল ও ইন্টার্ন আলিম বিশ্বাসরা।
আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে আজ চিঠি দিয়েছেন বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তদন্ত করার দাবি করেছেন তিনি। জহর সরকার ইস্তফা দেওয়ার ঘটনায় তাঁকে তোপ দেগেছেন যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। কুণাল ঘোষও কড়া সমালোচনা করেছেন জহর সরকারের। আর এই জেএনএম হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘অভীকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল না। বিয়ের অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ করার জেরে গিয়ে ছিলাম।’ আর শেখ অখিলের বক্তব্য, ‘মেডিক্যাল কাউন্সিলের পেনাল অ্যান্ড এথিক্যাল কমিটির সদস্য হওয়ায় অভীকের সঙ্গে পরিচয় হয়। ওইটুকই।’