বাংলায় জুটমিল বন্ধ হওয়ার ঘটনা প্রায়ই দেখা যায়। সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক নোটিশ ঝুলিয়ে দিয়ে চটকল কর্তৃপক্ষ বিপাকে ফেলে দেয় শ্রমিকদের। রুটি–রুজি নিয়ে চাপে পড়ে যান চটকল শ্রমিকরা। বিশেষ করে দুর্গাপুজোর আগে এমন ঘটনা ঘটলে মাথার উপর আকাশ ভেঙে পড়ে চটকল শ্রমিকদের। এবার তাঁদের জীবনে আশার আলো ফুটল। একদিকে ব্যারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিকের লাগাতার লড়াই সংসদে, অপরদিকে কেন্দ্রীয় সরকার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ফলে চটকল নিয়ে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। যা আজ, শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ পার্থ ভৌমিক।
এই ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল একের পর এক জুটমিল। আর সেই মিল বন্ধের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু কিছু জুটমিল রাজ্য সরকারের উদ্যোগে খোলা সম্ভব হলেও সবগুলি হচ্ছিল না। চটকল মালিকদের দাবি, উৎপাদন করে লাভের মুখ দেখা যাচ্ছে না। তাই বন্ধের পথে হাঁটতে হচ্ছে। এই আবহে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে পার্থ ভৌমিক ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, জিতে গেলে বিষয়টি নিয়ে সংসদে তুলে সমাধানের পথ বের করবেন। এবার কেন্দ্রের সহযোগিতায় সেই সমাধানের পথ বেরিয়ে এসেছে। যা জানালেন ব্যারাকপুরের সাংসদ।
আরও পড়ুন: অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন রাজ্যপাল, আরজি কর কাণ্ড নিয়ে দিলেন রিপোর্ট
রাজ্য সরকারের অভিযোগ ছিল, কেন্দ্রীয় সরকার যে পরিমাণ পাটজাত দ্রব্য রাজ্যের জুটমিল থেকে নিত সেটা এখন নিচ্ছে না। বরং প্লাস্টিকজাত দ্রব্যের দিকে ঝুঁকে সেই পাটজাত দ্রব্য বা পাটের ব্যাগের বরাত কমিয়ে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে চটকলগুলি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এই বিষয়ে সাংসদ পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘আমি কথা দিয়েছিলাম সাংসদ হতে পারলে জুটমিলগুলি নিয়ে একটা ব্যবস্থা করব। সংসদে এই নিয়ে বারবার আওয়াজ তুলেছি। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছি। অবশেষে পাটজাত দ্রব্য নিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কেন্দ্র। তাতে আমি অত্যন্ত খুশি। এবার শ্রমিকদের সমস্যা মিটবে।’
বাংলার কিছু চটকল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তা খোলার জন্য রাজ্য সরকারের হয়ে এগিয়ে আসেন নবনির্বাচিত সাংসদ পার্থ ভৌমিক। তিনি সংসদে বারবার জুটশিল্পকে বাঁচানোর পক্ষে সওয়াল করতে থাকেন। তার সেই প্রচেষ্টায় এবার সিলমোহর দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই বিষয়ে পার্থ ভৌমিকের বক্তব্য, ‘রাজ্যের জুটমিল ও জুট শ্রমিকদের জন্য সুখবর দিয়েছে কেন্দ্র। আগামী দিনে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জুট ব্যাগের বরাতের পরিমাণ ১০০ শতাংশ করা হবে এবং সেই সঙ্গে জুট ব্যাগের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার কথা চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের এই ঘোষণায় আমি খুশি। তবে কথার সঙ্গে কাজের মিল থাকছে কিনা সেটা আমরা লক্ষ্য রাখব।’