হাবড়া পুরসভা এলাকার কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠক থেকে শুরু করে একের পর এক চারটি পিকনিকে অংশগ্রহণ - দীর্ঘ ১৫ মাস পর নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে পা রেখে এভাবেই চরম ব্যস্ততার মধ্যে প্রায় গোটা একটা দিন কাটালেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালু।
রেশন দুর্নীতিতে নাম জড়ানোয় তাঁকে দীর্ঘ সময় হাজতবাস করতে হয়েছে। সেই মামলা এখনও চললেও সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন বালু। আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল, এবার হয়তো নিজের কেন্দ্র হাবড়ায় যাবেন তিনি। অবশেষে রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) সেই ঘটনা ঘটল।
তবে, তাঁকে যাঁরা কাছ থেকে দেখে অভ্যস্থ, তাঁদের কেউ কেউ বলছেন - 'দাদা'র চেহারা ও আচরণ কিছুটা যেন বদল লাগছে। প্রথমত, আগের তুলনায় তাঁকে শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ মনে হয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীদের। তার উপর এদিন জ্যোতিপ্রিয়র কথাবার্তা নাকি অনেক বেশি সংযমী ছিল।
সে যাই হোক, এত দিন পর প্রিয় 'বালুদা'কে কাছে পেয়ে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত হাবড়ায় তৃণমূলের নেতা, কর্মী ও সমর্থকরা। উৎসাহের পারদ এতটাই চড়া ছিল যে - 'বালুদা' আসছেন বলে এদিন এলাকার চারটি জায়গায় পিকনিকের আয়োজন করেন তৃণমূলের নেতা ও কর্মীরা। সেই আয়োজনগুলিতে জ্যোতিপ্রিয়কে যাওয়ার জন্য আগে থেকেই অনুরোধ করে রাখা হয়েছিল বলে দাবি সূত্রের।
রবিবার বেশ সকাল সকালই হাবড়ায় পৌঁছে যান জ্যোতিপ্রিয়। সেখানে প্রথমেই তিনি যান স্থানীয় পুরসভার কার্যালয়ে। সেখানে এলাকার কাউন্সিলরদের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন তিনি। এছাড়াও, হাবড়ার বদরহাটে তৃণমূল কংগ্রেসের একটি কার্যালয় উদ্বোধন করেন বালু।
এদিন হাবড়া পুর এলাকার ১৬ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে দু'টি আলাদা পিকনিকের আয়োজন করা হয়েছিল। নিজের প্রতিশ্রুতি মতো দু'টি জায়গাতেই যান তিনি। এছাড়াও, কুমড়ো গ্রাম পঞ্চায়েত এবং মছলন্দপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দলীয় সদস্যরাও আরও দু'টি পিকনিকের আয়োজন করেন এদিন। সেখানেও দেখা যায় বালুকে। তবে, পিকনিকে গেলেও সেভাবে কোথাওই খাওয়া-দাওয়া করতে দেখা যায়নি রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে।
সূত্রের দাবি, দীর্ঘ অসুস্থতার কারণে চিকিৎসকরা বালুকে নির্দিষ্ট ডায়েট চার্ট মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। তাই তিনি আপাতত পরিমিত আহার করছেন।
এদিন অনুগামীরা বালুকে এলাকাবাসী ও দলীয় সহকর্মীদের উদ্দেশে বক্তৃতা করার জন্য বহু আবেদন নিবেদন করেন। কিন্তু, প্রবীণ রাজনীতিক তাতে রাজি হননি। শোনা যাচ্ছে, আদালতের নির্দেশের কারণেই নিজেকে এসব থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।