পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ভরাডুবির পর এরাজ্যে আর সেভাবে দেখা যায়নি বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। এবার আরএসএস-এর রদবদলেও বাংলা থেকে সরানো হল কৈলাস ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত প্রদীপ যোশীকে। তিনি পূর্বাঞ্চলে আরএসএস-এর ক্ষেত্র প্রচারক ছিলেন। প্রদীপ যোশীর বদলে এই পদে বসানো হয়েছে রমাপদ পালকে। এদিকে দক্ষিণবঙ্গের থেকে জলধর মাহাতোকে করা হয়েছে সহ-ক্ষেত্র প্রচারক। এদিকে যোশীকে সর্বভারতীয় স্তরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যোশীকে সর্বভারতীয় সম্পর্ক প্রমুখের দায়িত্ব দিয়ে বাংলার থেকে দূর চণ্ডীগড়ে পাঠানো হল।
এদিকে এই বিষয়ে বিজেপির কেউ কোনও মন্তব্য করতে রাজি নন। এই প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্ত বসু বলেন, 'এটা একান্ত ভাবে আরএসএস-এর নিজস্ব বিষয়। সঙ্ঘের তরফে নয়ম মেনে ধারাবাহিক ভাবে এরম রদবদল হয়ে থাকে। এর সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই।' তবে পর্যবেক্ষকদের মত, ভোটের মুখে বিজেপির সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সরানো হয়েছিল সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে। দিলীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠ সুব্রতকে সরানোর নেপথ্যে যোশী ছিলেন বলে কানাঘুষো শোনা যায়।
এরপর ভোটের ফল প্রকাশ হতেই বিজয়বর্গীয়, শিবপ্রকাশদের পাশাপাশি যোশীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে। গত পাঁচদিন ধরে মধ্যপ্রদেশের চিত্রকূটে বৈঠক করে আরএসএস। সেখানে এসব বিষয়ে আলোচনা হয় বলে জানা গিয়েছে। আরএসএস চাইছে আগামিদিনে পশ্চিমবঙ্গে দলের নেতৃত্ব এমন নেতাদের হাতে থাকা উচিত যাঁরা সঙ্ঘ থেকে এসেছেন বা সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
বাংলায় বিধানসভা ভোটে হারের ময়নাতদন্ত করেছে আরএসএস। তাঁদের পর্যালোচনায় সামনে আসে যে ভোটের আগে বিজেপির কাজে আরএসএস-এর কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিল না। যাকে খুশি দলে নেওয়া হয়েছে। অন্য দল থেকে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের যাচাই না করেই সাংগঠনিক পদ দেওয়া হয়েছে। এমনকি, ১৪৮টি কেন্দ্রে তৃণমূল থেকে আসা নেতাদের প্রার্থী করা হয়েছে। তাদের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজন জিতেছেন। এতে পুরনো বিজেপি কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তাঁরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন বিজেপির থেকে। এই আবহে আরএসএস-এর পূর্বাঞ্চলীয় ক্ষেত্র প্রচারক বদল বেশ তাত্পর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।