পর পর কুড়ি জন অসুস্থ হয়ে পড়ল। তাও আবার স্কুলে। ক্লাস চলাকালীন এমন ঘটনা ঘটেছে। যা দেখে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে গোটা স্কুলে। শুধু যে স্কুলের পড়ুয়ারা অসুস্থ হয়ে পড়ছে তা নয়, শিক্ষিকারও অসুস্থ হয়ে পড়লেন। এমন ঘটনায় আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। কিন্তু কেন এমন পরিস্থিতি তৈরি হল? এই প্রশ্ন সকলের মনে উঠতে শুরু করেছে। অনেক খোঁজখবর করে জানা গেল এই অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণ কোনও এক অজানা ফল। যা খেয়ে ফেলাতেই বমি শুরু হয়েছে সকলের। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, অসুস্থ হয়ে পড়া সকলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাতে হয়েছে। যা ভয়েরও বটে।
এই অজানা ফল দেখতে খুব সুন্দর। যার জন্যই লোভে পড়ে অনেকে খেয়েছে। আর শিক্ষিকারাও খেয়েছেন। তাঁদেরও ওই ফল চেখে দেখার ইচ্ছা হয়েছিল। আর তাতেই বিপত্তি ঘটল উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ থানার বরুনা গ্রামপঞ্চায়েতের বিমলপাড়া চাউলি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এখানের পড়ুয়ারা এবং শিক্ষিকারা মুহূর্তের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়লেন। তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করতে হল। স্কুল চলাকালীন এই ঘটনা ঘটেছে। যদিও খেলার সময় স্কুলের পড়ুয়ারা পাশেই একটি পরিত্যক্ত ঘরের জঙ্গলে গিয়েছিল। সেখানেই একধরনের ফল তারা দেখতে পায়। যা দেখে লোভ লাগে এবং খেয়ে ফেলে। শিশুদের সঙ্গে সঙ্গে এক শিক্ষক এবং কয়েকজন শিক্ষিকা ওই ফল খেয়ে ফেলে বলে সূত্রের খবর। তারপর তাঁরা স্কুলে ফিরে আসেন।
আরও পড়ুন: আবার বাড়তে পারে আলুর দাম, ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন ব্যবসায়ীরা, চাপে রাজ্য সরকার
শুরু হয়ে যায় ক্লাস। পঠনপাঠন বেশ গতিতেই চলছিল। হঠাৎ পেটে মোচড় দিয়ে ব্যথা শুরু হল। তারপরই শুরু হয় বমি। এটাই আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কারণ একে একে অসুস্থ হতে শুরু করে পড়ুয়ারা। তার পর অসুস্থ হতে শুরু করেন শিক্ষক–শিক্ষিকারা। গোটা স্কুলে যেন মড়ক লেগেছে বলে মনে হয়। খোঁজখবর করে বাকিরা জানতে পারেন অজানা ফল খেয়েছেন তাঁরা। বিপত্তি শুরু হয়। স্কুলের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ায় আতঙ্ক তৈরি হয়। স্কুল থেকে বাড়ি ফিরেও কয়েকজন পড়ুয়া বমি করতে থাকে। দ্রুত তাঁদের কুনোর ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাদের রায়গঞ্জ মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।
এই ঘটনা দেখে অভিভাবকরা শিউরে ওঠেন। তাঁরা স্কুলে খোঁজখবর করতে শুরু করেন। কী এমন খেয়েছে পড়ুয়ারা যাতে এই হাল হচ্ছে? অভিভাবকদের প্রশ্নের জবাবে স্কুল জানিয়ে দেয়, সেই অজানা ফলের কাহিনী। তাতে আরও আতঙ্ক বেড়ে যায়। এখন রায়গঞ্জ মেডিক্যালের শিশু বিভাগ এবং সিসিইউতে চিকিৎসাধীন পড়ুয়ারা। এই ঘটনা নিয়ে ওই স্কুলের এক পড়ুয়া বলেছে, ‘স্কুলের পাশে একটা জঙ্গল আছে। সেখানে অনেকে গিয়েছিল। একটা বিশেষ ধরনের সুন্দর দেখতে ফল ছিল। তবে সেটা কী ফল অনেকে জানে না। সেই ফল বন্ধুরা খেয়ে ফেলল। তারপরই অসুস্থ হতে শুরু করে সবাই।’