পুলিশকে আগে সে সতর্ক করেছিল। বলেছিল, পশ্চিমবঙ্গে এমন কোনও জেল নেই যেখানে তাকে কেউ আটকে রাখতে পারে। পুলিশ এসব বড় বড় কথায় বিশেষ পাত্তা দেয়নি। আর তার খেসারত আজ, মঙ্গলবার দিতে হল পুলিশকে। কালনা মহকুমা আদালত থেকে পুলিশের চোখে ধূলো দিয়ে পালিয়ে গেল আসামী বলে অভিযোগ। এমন ঘটনায় ওই আসামী নিজের কথার প্রমাণ দিলেন। আর পুলিশের ভূমিকা নিয়ে রাতারাতি প্রশ্ন উঠে গেল। এই আসামী আগে যতবার ধরা পড়েছিল, ততবার সে পালাতে সক্ষম হয়েছিল। এবারও হল।
হুগলির বলাগড়ের বাসুদেব মণ্ডল। পেশায় ছিনতাইবাজ। পুরুষ–মহিলা নির্বিশেষে শিকার হতেন এই ছিনতাইবাজের। একটা বড় ছিনতাইয়ের অভিযোগ গ্রেফতার করা হয়েছিল বাসুদেব মণ্ডলকে। তারপর তাকে শ্রীঘরে রাখা হয়েছিল। আজ, মঙ্গলবার কালনা মহকুমা আদালতে তার প্রোডাকশন ছিল। সেই মতো পুলিশ তাকে এখানে নিয়ে এসেছিল। এখানে আসার আগে বাসুদেব শ্রীঘরে থাকা অন্যান্য বন্দিদের বলেছিল, ‘এই যাওয়াই আমার শেষ যাওয়া। কেউ ঠেকাতে পারবে না। জানিস আমি কে? মনে রাখিস আমার নাম বাসুদেব মণ্ডল।’
আরও পড়ুন: ‘রাজ্য সরকার আপনাদের চাকরি দিতে প্রস্তুত’, চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে রাস্তায় বসলেন কুণাল
ঠিক তাই হল। পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে গেল ছিনতাইবাজ আসামী বাসুদেব। আর পুলিশ কিছুই করতে পারল না বলে অভিযোগ। আসামী পালিয়ে যাওয়ার পর তদন্ত করে পুলিশ জানতে পারে কারাগারে থাকার সময় বাকি বন্দিদের পালানোর কথা সে জানিয়েছিল। কাউকে কিছু বলতে মানা করেছিল। এমনকী এটা করতে পারবে কিনা বাসুদেব জিজ্ঞাসা করলে বন্দিদের মুচকি হেসে বলেছিল, ‘জানিস আমি কে?’ এখন পুলিশ অবশ্য বুঝতে পারছে বাসুদেব মণ্ডল কে! কলকাতা, দমদম, বারাসত, বর্ধমান, হুগলি–সহ আরও ৯টা থানা থেকে ১৪ বার পুলিশের চোখে ধূলো দিয়ে পালিয়ে ছিল এই বাসুদেব মণ্ডল।
তারপরও কেন পুলিশ কড়া সুরক্ষা রাখল না? উঠছে প্রশ্ন। গত ১০ জুলাই নিউটাউন থানা থেকে বর্ধমান সংশোধনাগারে নিয়ে আসার সময় ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের শক্তিগড়ে পুলিশের চোখে ধূলো দিয়ে পালিয়ে যায় বাসুদেব মণ্ডল। এরপর গতকাল সন্ধ্যায় আগ্নেয়স্ত্র–সহ তাকে কালনা থানার পুলিশ আবার গ্রেফতার করে। পুলিশ মঙ্গলবার সকালে তাকে কালনা আদালতে পেশ করার সময় আদালতের এজলাসে নিয়ে আসে। কিন্তু সেখানেও পুলিশের জাল থেকে পালিয়ে যায় বাসুদেব। এই বিষয়ে কালনার এসডিপিও রাকেশ চৌধুরী বলেন, ‘এরকম একটি ঘটনা ঘটেছে। আমরা তার খোঁজে তদন্ত শুরু করেছি। কালনা জুড়ে চলছে তল্লাশি।’