আরজি কর মেডিক্যালে নিহত তরুণী চিকিৎসকের সুবিচারের দাবিতে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের ‘খুনি’ বলে আক্রমণ করলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আরজি কর মেডিক্যালে বিনা চিকিৎসায় যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ তুলে চিকিৎসকদের একাংশকে আক্রমণ করেন তিনি। একই সঙ্গে কল্যাণবাবুর দাবি, যারা ১ মাস ধরে মানুষকে চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করে তারা ডাক্তার হওয়ার যোগ্য নয়।
আরও পড়ুন - শৌচালয়ের দেখভালও করতে পারে না! পূর্ত দফতরের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ আদালত
পড়তে থাকুন - মালদায় কিশোরীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত হাতুড়ে ডাক্তার, ৯ দিনেই চার্জশিট দিল পুলিশ
দিন কয়েক আগে আরজি কর মেডিক্যালে বিক্রম ভট্টাচার্য নামে কোন্নগরের বাসিন্দা এক যুবকের বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ওই যুবকের মৃত্যুর জন্য জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতিকে দায়ী করে তাঁর পরিবার। এর পর সংবাদমাধ্যকে আরজি করের মেডিক্যাল সুপার সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায় জানান, ওই রোগী গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে এসেছিলেন। তাঁকে সময়মতো সব চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসা চালাকালীনই মৃত্যু হয় তাঁর। এব্যাপারে চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্ত নথি তাঁর কাছে রয়েছে। এক্ষেত্রে চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি হয়নি।
ওদিকে ঘটনার পর যে হাসপাতালে প্রথম বিক্রমবাবুকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সেই শ্রীরামপুর মাল্টি স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সুপার সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ওই যুবক অত্যন্ত গুরুতর আঘাত নিয়ে হাসপাতালে আসেন। তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়। কিন্তু অ্যাম্বুল্যান্স ড্রাইভার কেন আরজি করে নিয়ে গেল জানি না। অ্যাম্বুল্যান্সও আমাদের হাসপাতালের নয়। কোন্নগর পুরসভার অ্যাম্বুল্যান্সে যুবককে আনা হয়েছিল, ওই তাঁকে নিয়ে রওনা হয়েছিলেন পরিজনরা। তিনি বলেন, ওই যুবকের যে ধরণের আঘাত ছিল তার চিকিৎসা আমাদের এখানে হওয়া সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন - ‘ইহা পে আরজি কর হো জায়েগা’, বেসরকারি হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসককে হুমকি
যদিও চিকিৎসকদের কথা মানতে নারাজ মৃতের পরিবার। তাদের দাবি, আরজি করে নিয়ে যাওয়ার পর ২ ঘণ্টা বিক্রমবাবুর চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থাই হয়নি। আর সেই অভিযোগকে হাতিয়ার করে পথে নেমেছে তৃণমূল। বিক্রমবাবুর মৃত্যুর সুবিচারের দাবিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কোন্নগরে মিছিল করে তৃণমূল। মিছিলে নেতৃত্ব দেন আইনজীবী তথা শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। মিছিলে তিনি স্লোগান তোলেন, ‘খুনি ডাক্তারদের বিচার চাই।কলকাতার এলিট ক্লাসের দালাল দূর হঠো।’
এর পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কল্যাণবাবু বলেন, ‘যে ক্রিমিন্যাল অ্যাক্ট হয়ে গেছে তার সঙ্গে তো কোনও কম্প্রোমাইজ় করা যাবে না। এর বিচার করতেই হবে। আর যে ডাক্তাররা সুপ্রিম কোর্ট বলার পরেও কাজে যোগদান করল না তাদের মানসিকতা খুব পরিষ্কার। তারা তাদের ইগো নিয়ে চলছে। তারা বাংলার মানুষের সেবা করতে আসেননি। পরিষেবা দিতে আসেননি। এরা ডাক্তার হওয়ার আনফিট। যারা এক মাসের ওপর স্ট্রাইক করে ট্রিটমেন্ট দেয়নি তাদের ডাক্তার করা উচিত না। আমি সরকারের কাছে আবেদন করব। এদের ডাক্তারি পরীক্ষায় বসতে দেওয়া উচিত না।’