গ্রামের মেয়েকে গণধর্ষণ ও খুনের মামলায় হাইকোর্টে দোষীদের মৃত্যুদণ্ডের সাজা মকুব হওয়ার পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছে উত্তর ২৪ পরগনার কামদুনি। রাজ্য পুলিশের গাফিলতিতেই সুবিচার থেকে তাঁরা বঞ্চিত হয়েছেন বলে বারবার অভিযোগ তুলেছেন নির্যাতিতার পরিবার থেকে গ্রামবাসীরা। এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার আশ্বাস দিতে শুক্রবার রাতে কামদুনি গিয়ে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন সিআইডি আধিকারিকরা। গ্রামবাসীদের প্রশ্ন, ১০ বছরে কেন ঘুম ভাঙেনি সিআইডির?
শুক্রবার কামদুনি গণধর্ষণে হাইকোর্টের রায়ে রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে ফের তৈরি হয়েছে গণরোষ। ফের বিক্ষোভের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নিহত তরুণীর ভাই। সুবিচার পাননি বলে অভিযোগ করে কেঁদে ভাসিয়েছেন নির্যাতিতার ২ বান্ধবী মৌসুমী ও টুম্পা কয়াল।
নিহতের পরিবার পরিজনদের দাবি, রাজ্য পুলিশ ও সিআইডির গাফিলতিতেই ফাঁসির সাজা প্রাপ্ত ২ জনকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছে হাইকোর্ট। একজন কে তো বেকসুর খালাসই করে দিয়েছে। এছাড়া সাজা কমেছে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৩ জনের। যার ফলে জামিন পেতে চলেছে তারা।
কামদুনি গণধর্ষণে অভিযুক্তরা মুক্তি পেতে চলেছে এই খবরে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে গ্রামে। গ্রামবাসীদের দাবি, ওরা মুক্তি পেলে ফের অত্যাচার করবে। আমাদে ঘরে ঘরে মেয়েরা রয়েছে। তাদের মানুষ করব কী করে?
এসবের মধ্যেই শুক্রবার সন্ধ্যায় নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর অধীনস্থ স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রে জানা যায় হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যেতে চলেছে রাজ্য সরকার। রাতে সেকথা জানাতে মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান সিআইডির আধিকারিকরা। গ্রামে গিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পড়েম তাঁরা।
গ্রামবাসীদের প্রশ্ন, ১০ বছরে কামদুনি মামলায় ১৪ বার সরকারি আইনজীবী বদল হয়েছে। এই নিয়ে ২০১৫ – ২০২১ সালের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে ৩ বার চিঠি দিয়েছেন নির্যাতিতার ভাই। তার কোনও জবাব আসেনি। তখন কেন পদক্ষেপ করেনি CID? বিক্ষোভের মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার জন্য গ্রামবাসীদের সহযোগিতা চান সিআইডি আধিকারিকরা। সহযোগিতার আশ্বাস দেয় পরিবার।
যদিও পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্য সরকার ও সিআইডির ওপর বিন্দুমাত্র ভরসা নেই তাঁদের। তাঁরা পৃথকভাবে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।