কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। আর তদন্তে নেমেই রেলের তদন্তকারীদের হাতে এল নয়া তথ্য। উল্লেখ্য, রাঙাপানি স্টেশন ও কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনাস্থলের মধ্যে তিনটি রেলগেট রয়েছ। এর মধ্যে একটি রেলগেটের রক্ষী নাকি দুর্ঘটনার কিছু আগেই রাঙাপানি স্টেশনের সঙ্গে যোযোগ করে জানিয়েছিলেন, মালগাড়ির গতি অনেক বেশি। তবে মালগাড়িটি যে দ্রুত গতিতে ছুটছে তা চালককে জানানো যায়নি সিস্টেম কাজ না করার জেরে। এই সব ক্ষেত্রে ইন্টার্নাল সিস্টেমের মাধ্যমেই রেল চালকের সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকেন স্টেশন মাস্টার। তবে এই ক্ষেত্রে তা সম্ভব না হাওয়ায় মালগাড়ির চালকের মোহাইলে ফোন করার কথা ভাবা হয়েছিল। তবে সেই ফোন যাওয়ার আগেই কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে ধাক্কা মেরে বসেছিল মালগাড়িটি। (আরও পড়ুন: ১০ দিন আগে এসেও 'লেট', বর্ষা নিয়ে বড় আপডেট IMD-র, কলকাতায় কবে থেকে বৃষ্টি?)
আরও পড়ুন: সবুরে মেওয়া ফলে, ডিএ-বেতন নিয়ে বড় ঘোষণা করতে পারেন CM, জানালেন সরকারি কর্মীরাই
কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই একাধিক রেলকর্মীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। এই আবহে দুর্ঘটনার দিন মালগাড়ির ইঞ্জিনে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছিল কি না, তাও জানার চেষ্টা চলছে। এর জন্য মালগাড়ির ইঞ্জিনের মেকানিক্যাল ফরেন্সিক টেস্ট করানো হচ্ছে। এর আগে রেল বোর্ডের তরফ থেকেও মালগাড়ির গতিকেই দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছিল। প্রাথমিক তদন্তেও কি সেই একই কথা উঠে আসছে? (আরও পড়ুন: সরকারি পদক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগ, ২৫০০০ কোটির IPO আনার আগে সতর্কবার্তা হুন্ডাই-এর)
আরও পড়ুন: কর্মীদের ৮ লাখ পর্যন্ত ইনসেন্টিভ দেবে ভারতের এই IT সংস্থা, তবে আছে শর্ত
রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং সিইও জয়া বর্মা দাবি করেছিলেন, মানুষের ভুলেই কাঞ্চনজঙ্ঘা দুর্ঘটনা ঘটেছিল। তিনি দাবি করেন, লাল সিগন্যাল অমান্য করে এগিয়ে গিয়েছিল মালগাড়িটি। তবে পরে জানা যায়, এই লাইনে অটোমেটিক সিগন্যাল গোলমাল করছিল বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই। এই আবহে পেপার লাইন ক্লিয়ার টিকিট বা 'কাগুজে সিগন্যাল'-এর মাধ্যমে সেই লাইনে ট্রেন লাচল করছিল। আর কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে ধাক্কা মারা সেই মালগাড়ির কাছে নাকি লাল সিগন্যাল অতিক্রম করার অনুমতি ছিল সেই পেপল লাইন ক্লিয়ার টিকিটে। তবে এর অর্থ, ধীরগতিতে লাল সিগন্যাল পেরিয়ে যাওয়ার অনুমতি পেয়েছিলেন মালগাড়ির চালক। সেক্ষেত্রে দুর্ঘটনার দায় কার, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
আরও পড়ুন: নিজ্জরকাণ্ডে নীরবতা পালন কানাডা সংসদে, জবাবে ৮৫'র খলিস্তানি হামলা মনে করাল ভারত
রিপোর্ট অনুযায়ী, টি/এ৯১২ সংখ্যক 'পিএলসিটি' ইস্যু করা হয়েছিল মালগাড়ির চালককে। রঙ্গপানির স্টেশন মাস্টার সেই কাগুজে সিগন্যাল দিয়েছিলেন। সেই টিকিটে বলা হয়েছিল, রঙ্গপানি রেল স্টেশন এবং ছত্তরহাট জংশনের মধ্যে যতগুলি অটোমেটিক সিগন্যাল আছে, সেগুলি পার করার অনুমতি দেওয়া হল। এদিকে নিয়ম অনুযায়ী, এই ধরনের কাগুজে সিগন্যাল ব্যবহার করা হলে প্রতি অটোমেটিক সিগন্যালে ১ মিনিট করে অপেক্ষা করতে হবে দিনের বেলায়। এরপর ১০ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে এগোতে হবে। এই আবহে লাল সিগন্যাল পার করার অনুমতি থাকলেও দুর্ঘটনার স্থল দিয়ে খুবই ধীর গতিতে মালগাড়িটি পার করার কথা ছিল। এই আবহে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হলেই বোঝা যাবে, কেন বিধি অমান্য করে এত দ্রুত গতিতে সেখান দিয়ে ছুটেছিল সেই ঘাতক মালগাড়িটি।