তিনি কাঁথির বাসিন্দা। বাড়ির নাম শান্তিকুঞ্জ। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রাম থেকে জয়ী হন। আর এখন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। হ্যাঁ, তিনি শুভেন্দু অধিকারী। আর তাঁরই গড়া এবং খাসতালুক কাঁথিতে জোর ধাক্কা খেল বিজেপি। সদ্য উপনির্বাচনের ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি বিজেপি। তার মধ্যেই কাঁথি–১ পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত হৈপুর গ্রাম পঞ্চায়েত হাতছাড়া হয়ে গেল প্রধান বিরোধী দলের। গতকাল অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ওই পঞ্চায়েত দখল করে তৃণমূল কংগ্রেস। আর গ্রাম পঞ্চায়েত হাতছাড়া হতেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হৈপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান অশোককুমার সামন্ত।
গোটা রাজ্যেই এখন নানা নির্বাচনে হেরে চলেছে বিজেপি। বিধানসভা নির্বাচন থেকে তা শুরু হয়েছে। পুরসভা, পঞ্চায়েত, লোকসভা এমনকী সমবায় নির্বাচনেও জিততে পারছে না বিজেপি। সেখানে এবার শুভেন্দুর গড় কাঁথি–১ পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত হৈপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট ২৩টি আসন আছে। ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি প্রতীকে জয়ী হন ১২ জন। আর তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীকে জয়ী হন ১১ জন। তাই তখন পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল করে বিজেপি। কিন্তু প্রধান কোনও কাজ করেন না বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের। দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ছিলেন প্রধান অশোক সামন্ত বলে অভিযোগ শাসকদলের।
আরও পড়ুন: ‘দীপু দাস ঠাকুরের মৃত্যুতে আমি শোকাহত’, এক্স হ্যান্ডেলে শোকপ্রকাশ করলেন মমতা
গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ে আসতেন না বিজেপির এই প্রধান বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের। তাই বিজেপি প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে তৃণমূল কংগ্রেস। কাঁথি থানার আইসির উপস্থিতিতে কড়া পুলিশের নিরাপত্তার মাধ্যমে সম্পন্ন হয় ভোটাভুটি। তখন বিজেপির একজন সদস্য উপস্থিত হলেও বাকি সকলে অনুপস্থিত থাকেন। তৃণমূল কংগ্রেসের ১১ জন এবং বিজেপির ১ জন সদস্যের সমর্থনে গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করে তৃণমূল কংগ্রেস। ভোটাভুটির হোয়ার জেরে স্থায়ী সমিতি ভেঙে যায়। আর পঞ্চায়েতে ঘাসফুল ফোটে। তাতেই আনন্দে মেতে ওঠেন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা।
শুভেন্দু অধিকারীর গড়ে বিজেপির এই পরাজয় যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। হাতে আর ১৫ মাস বাকি। তারপরই ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন হবে। তাই এই পঞ্চায়েত দখল করে উজ্জীবিত ঘাসফুল শিবির। আবির মেখে ঢাক বাজিয়ে আনন্দ করেন কর্মী–সমর্থকরা। হৈপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদ্য প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা নিতাই দাস বলেন, ‘বিজেপির প্রধানের কাজে তিতিবিরক্ত হয়ে একজন তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে ভোট দেন। স্থায়ী সমিতি ভাঙার জন্য যে কাউকে ভোট দেওয়া যায়।’ আর বিজেপি নেতা বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেছেন, ‘আমাদের প্রধান কোনও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নন। ভয় দেখিয়ে বিজেপির সদস্যের ভোট জোগাড় করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।’ যদিও অশোককুমার সামন্তের কথায়, ‘বিডিও কোনও নোটিশ দেননি। আদালতের দ্বারস্থ হবো।’