কাঁথি সমবায় নির্বাচনে তৃণমূল–বিজেপি সংঘর্ষ তুমুল আকার নিল। রবিবাসরীয় সকালে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে হিংসার ঘটনায় আলোড়ন ছড়িয়ে পড়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের কাছে পথ অবরোধ করে বসে পড়েছে বিজেপি। আসলে নিজেদের গড়ে হেরে যাবার ভয়ে এমন করেছে বিজেপি বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের। সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রামনগরে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ল তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেস ভোটারদের বুথে যেতে বাধা দিচ্ছে। প্রতিবাদ করার জেরে বিজেপি কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। তাই পথ অবরোধ করা হয়েছে।
এদিকে এই অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেস। তাদের দাবি, সামান্য সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনেও হেরে যাবে বিজেপি, তাও আবার বিরোধী দলনেতার খাসতালুকে তাই ইস্যু তৈরি করছে বিজেপি। এবার যদিও নির্বাচন বয়কটের ডাক দিয়ে পথ অবরোধ শুরু করেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। তবে পরে জেলার পুলিশ এসে অবরোধ তুলেও দেয়। কিন্তু এলাকায় উত্তেজনা কমেনি। অথচ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এই নির্বাচনের ময়দানে নেমেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। এখানে ১০৮টি আসনে প্রতিনিধি নির্বাচন হওয়ার কথা। এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৩০ জন প্রার্থী। কারচুরি ঠেকাতে বুথে বুথে বসেছে সিসিটিভি ক্যামেরা। আর রাজ্যে কোনও সমবায় নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা এই প্রথম।
আরও পড়ুন: এবার খাস কলকাতায় বন্ধ থাকবে জল সরবরাহ, রাত পোহালেই সমস্যা শুরু, কবে মিলবে?
অন্যদিকে বিজেপি মণ্ডল সভাপতি সত্যেন পঞ্চাধ্যায়ী এই ঘটনা নিয়ে দাবি করেন, সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচন শুরুতে সব ঠিকঠাকই ছিল। রামনগর কলেজের কাছে তিনি দাঁড়িয়েছিলেন। হঠাৎ তৃণমূল কংগ্রেস নেতা গৌতম জানার নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন সেখানে পৌঁছে যায়। তারপর বেমক্কা বিজেপি নেতাকে চড় মারতে থাকে তারা। আর ওই মারধরের ফলে চোখে থাকা চশমা ছিটকে দূরে পড়ে যায়। তখন থেকেই উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়। তার জেরে রামনগর ২ নম্বর ব্লকের দেপালে পথ অবরোধ করে বিজেপি। যদিও বিজেপির তোলা অভিযোগ কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপির এই অভিযোগ নস্যাৎ করে দেন রামনগরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক অখিল গিরি।
এছাড়া এই ঘটনাকে নিয়ে দু’দলের মধ্যেই চলে চরম সংঘর্ষ। উত্তেজনা চরমে ওঠে। এই ছুটির দিনে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় রামনগর। বিজেপি নেতা তপন মাইতির অভিযোগ, ‘আমাদের কর্মীরা বুথে ভোট দিতে গেলে তাঁদের হাত থেকে কুপন কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। ভোটার কার্ড কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। বেশ কয়েকজনকে মারধর করা হয়েছে। বুথে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে। সবটাই ঘটছে পুলিশের সামনে। প্রশাসন সবার ভোট দেওয়া নিশ্চিত করলে তবেই আমরা পথ অবরোধ তুলব।’ পাল্টা অখিল গিরি বলেন, ‘রামনগরে কোনও অশান্তির খবর নেই। বিজেপি মিথ্যে অভিযোগ তুলে এলাকায় অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। আমরা শান্তিপূর্ণ ভোট সম্পন্ন করতে চাইছি। ভারতে প্রথমবার একটি সমবায় নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী নামানো হয়েছে। এটা আমাদের কাছে অত্যন্ত লজ্জার।’