গত বিধানসভা ভোটে দলের শোচনীয় পরাজয়ের পর রাজ্য নেতৃত্বের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন সিপিআইএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। ফের আরও একবার দলের খোলনলচে বদলের প্রস্তাব দিয়ে দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রকে চিঠি দিলেন তিনি। চিঠিতে দলের এই শোচনীয় পরাজয়ের কারণ মূল্যায়ণ করার প্রয়োজনীয়তা আছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সিপিএমের এই বর্ষীয়ান নেতা জানান, ‘দলের কেন এই বিপর্যয় হল, সে বিষয়টি মূল্যায়ন করে দেখতে হবে। দল তো একটা সময়ে শুদ্ধিকরণের পথে হেঁটেছিল। সেগুলিকে নিয়েই ফের পুনরায় মূল্যায়ন করা দরকার।’ একইসঙ্গে তিনি জানান, এখনই দলে যত কমিটি আছে, সব ভেঙে দেওয়া উচিত। ফের শূন্য থেকে শুরু করতে হবে। উল্লেখ্য, গত বিধানসভা নির্বাচনে একটি আসনেও জিততে পারেনি বামেরা। এই পরিস্থিতিতে দলের মধ্যেই রাজ্য নেতৃত্বের প্রতি তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। জানা গিয়েছে, কান্তিবাবু সিপিএমের রাজ্য সম্পাদককে যে চিঠি দিয়েছেন, সেই চিঠি পেয়ে কান্তিবাবুকে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে ডেকে পাঠানো হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার তাঁকে রাজ্য সিপিএম সদর দফতরে আসতে বলা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে কথা বলবেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। ইতিমধ্যে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যানের সঙ্গে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
এর আগে বিধানসভা ভোটে ফল ঘোষণার পরই প্রথমেই রাজ্য নেতৃত্বের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন উত্তর দমদম কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য। তারপরেই যিনি মুখ খুলেছিলেন কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। কান্তিবাবু যে তাঁর আগের অবস্থান থেকে এক চুলও সরেননি, সেকথা ফের বুঝিয়ে দিলেন তিনি। সেইসময় তিনি বলেছিলেন, ‘মৌলবাদী শক্তিকে রুখে দিতে বাংলার মানুষ সচেতন পরিচয়ই দিয়েছেন। সংযুক্ত মোর্চা মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে পারেনি। গোল গোল কথা না বলে এর গঠনমূলক অনুসন্ধান দরকার।’ উল্লেখ্য, সম্প্রতি সাধারণ মানুষ কী ভাবছে, সেকথা জানার জন্য এবার জনতার মতামত শুনতে চাইছে সিপিএম। কিন্তু যেখানে রাজ্য নেতৃত্বের প্রতি প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন নেতারা, সেখানে দলের মধ্যে হারের কারণ নিয়ে ভালোভাবে বিচার বিশ্লেষণ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।