বাংলাদেশের জেলে নাকি অসুস্থ চিন্ময় প্রভু। ২৫ মার্চ ফেবসুকে একটি সবাপত্রের কাটিং পোস্ট করেন লেখিকা তসলিমা নসরিন। তাতেই দাবি করা হয়, চিন্ময় প্রভুর হার্টে সমস্যা হচ্ছে। এদিকে লিভারেও সমস্যা দেখা গিয়েছে তাঁর। এরই মাঝে চিন্ময় প্রভু নাকি জেলের ভিতরেই অনশন করছেন। এহেন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ইউনুস সরকারকে তোপ দেগেছেন কার্তিক মহারাজ। এই বিষয়ে তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের প্রশাসন খুবই গর্হিত কাজ করছে। একজন সন্ন্যাসীকে মিথ্যা মামলায় বিনা বিচারে জেলে আটকে রাখা হয়েছে।' (আরও পড়ুন: 'গোপন ইন্টেল' পাওয়ার পর মার্কিন বাহিনীর কর্তার সাথে বৈঠক বাংলাদেশি সেনা প্রধানের)
আরও পড়ুন: 'অভ্যুত্থান গুজবে' নাম থাকা বাংলাদেশি জেনারেল দেখা করলেন অভ্যুত্থানকারীদের সঙ্গে
এরপর কার্তিক মহারাজের প্রশ্ন, 'এভাবে চিন্ময় প্রভুকে জেলে মেরে ফেলে কি বাংলাদেশি হিন্দুদের শিক্ষা দিতে চাইছে জিহাদিরা?' তিনি এরপর বলেন, 'আমি ভারত সরারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এই বিষয়ে। চিন্ময় প্রভুর জীবন রক্ষার জন্যে ভারত সরকার চাপ সৃষ্টি করুক বাংলাদেশ সরকারের ওপর। প্রয়োজনে এই নিয়ে আমেরিকার প্রশাসনের সঙ্গেও কথা বলা হোক।' (আরও পড়ুন: 'বিদেশের মাটিতে ভারত বিরোধীদের মারছে', RAW-কে নিষিদ্ধ করার দাবি মার্কিন কমিশনের)
আরও পড়ুন: '…আমরা সততার পরিচয় বহন করি না', 'যুদ্ধাবস্থায়' থাকা বাংলাদেশ নিয়ে বললেন ইউনুস
এদিকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশি হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর জামিন মামলার রুল সংক্রান্ত শুনানি হতে চলেছে শীঘ্রই। বিডিনিউজ২৪-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ইদের ছুটির পরই এপ্রিল মাসে বাংলাদেশ হাইকোর্ট খুলতেই প্রথম সপ্তাহেই মামলাটি উঠতে পারে এজলাসে। গত ১৯ মার্চ এই সংক্রান্ত নির্দেশ দেয় বিচারপতি মহম্মদ আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মহম্মদ আলি রেজার বেঞ্চ। এই বিষয়ে চিন্ময় প্রভুর আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য জানান, ২৩ এপ্রিল এই রুলের উপর শুনানি হতে পারে।
এর আগে গত ৪ জানুয়ারি এক রুল জারি করে হাইকোর্ট জানতে চেয়েছিল, কেন জামিন দেওয়া হবে না চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে। তার আগে গত ২৬ নভেম্বর চিন্ময় প্রভুর জামিনের আবেদন খারিজ করেছিল চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মহানগর হাকিম আদালত। তারপর গত ২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতও তাঁর আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল। এই আবহে গত ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলেন চিন্ময় প্রভু।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশ করেছিল বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ। সেই সমাবেশে ভাষণ দিয়েছিলেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুও। সেই সমাবেশেই নাকি তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছিলেন। এই অভিযোগেই চট্টগ্রামে একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন বিএনপি নেতা ফিরোজ খান। গত ৩১ অক্টোবর চিন্ময় দাস-সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন সেই নেতা। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই গত ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে গ্রেফতার করে ঢাকা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। এরপর তাঁকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের আদালতে বাইরে হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকে জড়ো হয়েছিলেন চিন্ময় প্রভুর গ্রেফতারির প্রতিবাদ জানাতে। সেই জনতার ওপর নির্বিচারে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে এই সংঘর্ষে এক আইনজীবী খুন হন। সেই খুনের ঘটনায় সব মিলিয়ে ২১ জন হিন্দুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের হয়ে কোনও আইনজীবী যাতে মামলা না লড়েন, তার জন্যে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করারও অভিযোগ উঠেছিল।