লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন বিতর্কে জড়িয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সন্ন্যাসী কার্তিক মহারাজ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি জনসভা থেকে তাঁর বিরুদ্ধে সরাসরি বিজেপির হয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছিলেন। পরে তা নিয়ে মামলা গড়ায় হাইকোর্টে। সেই সন্ন্যাসী কার্তিক মহারাজ ওরফে প্রদীপানন্দ মহারাজকে প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে পদ্মশ্রী পুরস্কারে সম্মানিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। তাঁকে এই সম্মানে ভূষিত করবে কেন্দ্র। এরজন্য তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে তিনি জানান, রাজ্য সরকারের সমালোচনার জন্যই তিনি দেশব্যাপী পরিচিতি লাভ করেছেন ।
আরও পড়ুন: কার্তিক মহারাজ তো সন্ন্যাসী, তাঁর আবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা লাগে কেন?
বাংলা থেকে এবার পদ্মশ্রী পুরস্কার পাচ্ছেন ৯ জন। তার মধ্যে একজন হলেন এই সন্ন্যাসী। একটি সংবাদ মাধ্যমকে সাক্ষাৎকারে কার্তিক মহারাজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনার কথা স্মরণ করে বলেন, ‘আমি বাংলার সরকার এবং রাজ্যের শাসক দলকে ধন্যবাদ জানাই। আমার এবং আমার কাজের বিষয়ে তাদের সমালোচনা আমার প্রচেষ্টাকে দেশব্যাপী পরিচিতি পেতে সাহায্য করেছে। তাদের সমালোচনা আমাকে বিখ্যাত করেছে। আগে, আমি কেবল মুর্শিদাবাদে পরিচিত ছিলাম। কিন্তু এখন আমি দেশব্যাপী পরিচিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য শুনে আমার কাজ নিয়ে জানতে শুরু করে। এখন সবাই জানে আমার কাজ এবং স্বামীজি কে। এর জন্য আমি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই।’
কেন্দ্রকেও ধন্যবাদ জানান মহারাজ। উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদের ভারত সেবাশ্রম সংঘের বেলডাঙা শাখার সম্পাদক কার্তিক মহারাজকে কল্যাণমূলক কাজের জন্য পদ্ম পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। মহারাজের কথায়, ‘যারা গেরুয়া পোশাক পরেন তারা পুরস্কার বা প্রশংসা চান না। আমাদের সংস্থা ভারত সেবাশ্রম সংঘ, আমাদের হাসপাতাল এবং স্কুল এই স্বীকৃতি থেকে অনেক উপকৃত হবে। হাজার হাজার মানুষ এখানে চিকিৎসা পায়। এই পুরস্কার এই সমস্ত প্রচেষ্টার জন্য একটি প্রধান অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। আমি ভারত সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। বাংলায় স্বামী বিবেকানন্দ জনগণের সেবা করার মিশন শুরু করেছিলেন। আমরা সেই উত্তরাধিকার চালিয়ে যাচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, মহারাজের বিরুদ্ধে রাজনীতি করার অভিযোগ তোলার পর তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, সেই সময় রাজ্য জুড়ে আন্দোলন শুরু হয়েছিল। পরে মামলা গড়ায় হাইকোর্টে। যদিও সেই মামলায় স্বস্তি পেয়েছিলেন মমতা। আদালত সন্ন্যাসীর মামলা খারিজ করে দিয়েছিল।