মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে গুঞ্জন বেড়েই চলেছে। তৃণমূল বা বিধায়ক পদ এখনও না ছাড়লেও তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান ঠিক কী তা জানার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি রাজনৈতিক দল। তাঁদের এবং সাধারণ মানুষের আশা ছিল, রবিবার পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল রাজবাড়ি প্রাঙ্গণে আয়োজিত অরাজনৈতিক সভায় হয়তো তিনি তৃণমূলের ওপর তাঁর ক্ষোভ উগরে দেবেন বা নিজের দলবদলের জল্পনা বাড়িয়ে দেবেন। কিন্তু এর কোনওটাই এদিন হয়নি। অরাজনৈতিক সভায় এদিন রাজনীতির আঁচ লাগতে দেননি জননেতা শুভেন্দু অধিকারী।
এদিন প্রয়াত স্বাধীনতা সংগ্রামী রণজিৎ কুমার বয়ালের স্মরণসভার আয়োজন করে তাম্রলিপ্ত জনকল্যাণ সমিতি। সংগঠনের সভাপতি হিসেবে এদিনের সভায় আমন্ত্রিত ছিলেন ‘দাদা’ শুভেন্দু অধিকারী। তিনি আসার আগে এদিন তাঁর ‘অনুগামী’দের দেখা যায় সাদা টি–শার্ট পরে শুভেন্দু অধিকারীর নাম লিখে বিশাল ব্যানার মাথায় করে সভাস্থলে ঢুকতে। সভায় স্বাধীনতা সংগ্রামে পূর্ব মেদিনীপুরের অবদান নিয়ে বলার পর এদিন শুভেন্দু বলেন, ‘সমস্ত ব্যবস্থাতেই শেষ কথা বলবে জনগণ। সংবিধান আমাদের এই অধিকার দিয়েছে। সেই জনগণের বিপুল সমুদ্র ঢেউকে সামনে রেখে আমার দায়বদ্ধতা পালনে কাজ করে যাব।’
বাংলা ও বাঙালির একজন সেবক হিসেবে কাজ করে যেতে চান শুভেন্দু অধিকারী। সভায় তিনি এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বঙ্গসন্তান প্রণব মুখোপাধ্যায়, স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং তাঁর তাম্রলিপ্ত জনকল্যাণ সমিতিকে নিয়ে বিভিন্ন স্মৃতিচারণ করেন সদ্য প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। সভা থেকে এদিন তাঁর পরবর্তী কয়েকদিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন তিনি। বলেন, ‘আগামী ৩ ডিসেম্বর শহিদ ক্ষুদিরাম বসুর জন্মদিবস। ১৫ ডিসেম্বর সর্বাধিনায়েকের জন্মদিবস। ১৭ ডিসেম্বর তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারের প্রতিষ্ঠা দিবস। প্রত্যেক বছর শুভেন্দু অধিকারী এই দিনগুলি তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে যেভাবে পালন করে, ঠিক একইভাবে এ বছর জনতা–জনার্দনকে নিয়ে দিনগুলি পালন করা হবে।’
জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যে দিয়ে এদিন সভা শেষের আগে তিন শব্দের বেশ তাৎপর্যপূর্ণ কথা বলেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘আমি রাস্তায় থাকব।’ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এখনই তিনি রাজনৈতিক ময়দান ছেড়ে যাচ্ছেন না তা বোঝাতেই রাস্তায় থাকার কথা বলেন এদিনের সভার শেষে। এদিকে, এদিনই শুভেন্দুর সভামঞ্চ থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে পাল্টা মিছিল ও সমাবেশ করে তৃণমূল। সেখানে নেতৃত্ব দিয়েছেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী— সুজিত বসু ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।