নাগরাকাটায় হামলা নিয়ে মুখ খুললেন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। তিনি দাবি করলেন, সেদিন তাঁকে খুন করার চেষ্টা করা হয়েছিল। আর তাঁর আঙুল সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে। এদিকে, হামলার পর খগেন মুর্মুর নিরাপত্তা ব্যবস্থা এক্স ক্যাটেগরি থেকে বাড়িয়ে ওয়াই প্লাস ক্যাটাগরি করল কেন্দ্রীয় সরকার। খগেনের ওপর হামলার ঘটনায় এফআইআরে নাম রয়েছে ৮ জনের। তাদের মধ্যে ২ জন গ্রেফতার হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে তাদের পরিচয় গোপন রাখে পুলিশ। এছাড়া ধৃতরা কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত কি না, তা নিয়েও মুখে কুলুপ এঁটেছে পুলিশ।
এই আবহে হামলা প্রসঙ্গে খগেন মুর্মু সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'যারা হামলা চালিয়েছিল, তারা টিএমসির গুন্ডা। বলেছিল, আমরা দিদির লোক। কোনও প্রয়োজন নেই বিজেপির। যান এখান থেকে। আমরা কোনওরকমে গাড়িতে উঠে পড়েছিলাম। ওরা দরজা খোলার চেষ্টা করেছিল। পারেনি। তখন ইট দিয়ে গাড়ির কাচ ভাঙে। ইট এসে লাগে। যদি গাড়ি থেকে টেনে নামাতে পারত, তবে আমাদের মেরে ফেলত।' এদিকে খগেন পুত্র অনিমেষও দাবি করেন, বাবাকে খুনের চক্রান্ত করা হয়েছিল। তিনি বলেন, 'এর আগেও বাবার ওপর হামলার চেষ্টা হয়েছিল। এবারও ছক করেই আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে উপস্থিত ছিল দুষ্কৃতীরা। আদিবাসী সমাজে ক্রমশ জনপ্রিয় নেতা হয়ে উঠেছিলেন বলেই খুনের চেষ্টা করা হয় বাবাকে।'
উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গের নাগরাকাটায় বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এবং বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের ওপর হামলা হয়েছিল সম্প্রতি। প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর এলাকা পরিদর্শন এবং ত্রাণ বিতরণ করতে নাগরাকাটায় গিয়েছিলেন মালদা উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন এবং শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর। শঙ্কর ঘোষকে চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। তাঁর হাতে চোট লেগেছিল। তবে খগেন মুর্মুর চোখের নীচের হাড় ভেঙে গিয়েছে। তাঁর ভাঙা হাড়ের এক্স-রে রিপোর্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এই আবহে খগেনকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু, সুকান্ত মজুমদাররা। এদিকে সাংসদের ওপর হামলায় ইতিমধ্যেই পুরো ঘটনা নিয়ে রিপোর্ট তলব করেছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, আপাতত খগেন মুর্মুর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও, রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি থাকায় এখনই অস্ত্রোপচার করা সম্ভব নয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অন্তত ছয় সপ্তাহ হাসপাতালে থাকতে হতে পারে প্রবীণ সাংসদকে।