নাগরাকাটায় বিক্ষোভের মুখে গুরুতর আহত হয়েছেন মালদা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। তাঁর চোখের নিচের হাড় ভেঙে গিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন চিকিৎসকেরা। বর্তমানে তিনি শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে দিল্লির এইমসে স্থানান্তরের কথাও ভাবছেন পরিবারের সদস্যরা।
আরও পড়ুন: খগেন মুর্মুর উপর হামলায় রিপোর্ট তলব লোকসভার স্পিকারের, সতর্ক করলেন রিজিজু
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, খগেন মুর্মুর মুখে অস্ত্রোপচার করে পাত বসানোর প্রয়োজন হতে পারে। তাঁর চোখের নিচ থেকে নাকের দিক পর্যন্ত গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে। সেই জায়গায় সাতটি সেলাই পড়েছে। প্রথমে পাঁচটি সেলাই দেওয়া হলেও পরে অবস্থা বুঝে আরও দুটি সেলাই দিতে হয়েছে। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, আগামী অন্তত পনেরো দিন কথা বলা বা মুখে চাপ পড়ে এমন কিছু করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে সাংসদের জন্য। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার দুপুরে। উত্তরবঙ্গের দুর্যোগকবলিত নাগরাকাটা এলাকায় পরিদর্শনে যান খগেন মুর্মু ও শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। বামনডাঙা এলাকায় ঢোকার আগেই স্থানীয় কিছু মানুষ বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। অভিযোগ, হঠাৎ করেই একদল বিক্ষুব্ধ মানুষ তাঁদের গাড়ির উপর চড়াও হয়। লাঠি, জুতো, এমনকি নদীর ধার থেকে পাথর তুলে ছুড়ে মারা হয় গাড়ির দিকে।
সেই সময় গাড়ির পিছনের সিটে বসেছিলেন সাংসদ খগেন মুর্মু। পরিস্থিতি শান্ত করতে গাড়ি থেকে নেমে আসতেই পিছন থেকে কারও ছোড়া পাথর এসে আঘাত করে তাঁর মুখে, চোখের ঠিক নিচে। সঙ্গে সঙ্গে রক্ত ঝরতে থাকে মুখ থেকে। একই ঘটনায় আহত হন শঙ্কর ঘোষও। ঘটনার পর বিজেপির পক্ষ থেকে আটজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু প্রায় ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এই নিয়েই বিজেপি নেতৃত্ব তীব্র প্রশ্ন তুলেছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে।
ইতিমধ্যেই ঘটনাটির রিপোর্ট চেয়েছেন লোকসভার স্পিকার ওমপ্রকাশ বিড়লা। পাশাপাশি, দ্রুত তদন্তে অগ্রগতি না হলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরণ রিজিজু। তিনি শিলিগুড়িতে এসে বলেন, একজন সাংসদের উপর হামলা শুধু রাজনৈতিক নয়, সাংবিধানিক ব্যবস্থার উপর আঘাত। দোষীদের গ্রেফতার করতেই হবে।
ফলে নাগরাকাটার এই হামলা ঘিরে রাজনৈতিক মহলে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, খগেন মুর্মুর অবস্থা এখন স্থিতিশীল হলেও আশঙ্কা এখনও পুরোপুরি কাটেনি। দিল্লিতে উন্নত চিকিৎসার প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু করেছে তাঁর পরিবার।