এবার খানাকুলের বড় সমস্যা মেটাতে চলেছে রাজ্যের সেচ দফতর। এই খানাকুলে কদিন আগেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। ক্ষতি হয়েছিল গ্রামের পর গ্রাম। ক্ষয়ক্ষতি প্রচুর হওয়ায় ভাবনা শুরু হয় তখন থেকেই। এবার সেচ দফতরের পক্ষ থেকে নতুনভাবে এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজ শুরু হল। বন্যা পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে নদীবাঁধ সংস্কার, খাল সংস্কার, স্লুইসগেট তৈরি, সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করেছে সেচ দফতর। আর এইসব কাজ করতে প্রায় ১৪ কোটি টাকা খরচ হবে বলে সেচ দফতর সূত্রে খবর।
একদিকে ডিভিসি’র জল ছাড়া অপরদিকে অতিবৃষ্টি—খানাকুলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। আর এই বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল খানাকুলের শশাখালি, ধান্যঘোরি, ঘোড়াদহ, নন্দনপুর, বন্দর, ঠাকুরানিচক। ভেসে গিয়েছিল একের পর এক গ্রাম। বানভাসী অবস্থায় মানুষের দুর্গতির শেষ ছিল না। সেচ দফতর সূত্রে খবর, খানাকুল ২ নম্বর ব্লকের শশাখালিতে অরোরা খাল রয়েছে। সেখান দিয়ে বন্যার জল গিয়ে পড়ে রূপনারায়ণ নদীতে। ফলে নদীর জল বেড়ে তা বাইরে চলে আসে। কিন্তু ওই খাল চার কিমি সংস্কার করা হয়েছিল। বাকি ১২ কিমি সংস্কার করা হয়নি। এবার সেই সংস্কারের কাজ শুরু হবে।
আরও পড়ুন: গঙ্গায় নেমে তলিয়ে গেলেন বরাহনগরের যুবক, জন্মদিনের পার্টি সেরে নদীতে, নামল ডুবুরি
তবে তার সঙ্গে শশাখালিতে স্লুইসগেট তৈরি হবে। যা বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করবে। এখানে নন্দনপুর রথতলা থেকে ধান্যঘোরি ঘোড়াদহ যাওয়ার একমাত্র পথ অরোরা খাল। এই আরোরা খালের উপর এবার সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হচ্ছে। এই সেতুর জন্য আনুমানিক ৬.৮৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই সেতু নির্মাণ হয়ে গেলে জগৎপুর এবং ধান্যঘোরি পঞ্চায়েত এলাকাকে সরাসরি যুক্ত করবে। তাতে এই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটবে। খানাকুলের বহু কৃষক এই সেতু গড়ে উঠলে উপকৃত হবে। আগে এখানে সাঁকো ছিল। বন্যা তা ভেঙে পড়ত। তখন মানুষকে ঘুরপথে খানাকুল স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং বাজারে যেতে হতো।
এখানে স্লুইস গেট গড়ে উঠলে রূপনারায়ণ নদীর জোয়ারের জল আটকে রাখা যাবে। আবার সেই জল ব্যবহার করে বোরো চাষের কাজে লাগানো যাবে। এতে খানাকুলের কৃষকরা উপকৃত হবেন। কয়েকজন কৃষক এই খবর শুনে বলেন, ‘আমাদের অনেক দিনের দাবি ছিল অরোরা খালের উপর স্লুইস গেট গড়ে উঠুক। গরমকালে চাষের কাজে জলের সমস্যা হয়। সেটা মিটে যাবে। তাই স্লুইস গেট তৈরির কাজে আমরা খুশি। এবার রূপনারায়ণের জোয়ারের জল আমরা চাষের কাজে ব্যবহার করতে পারব।’ এই বিষয়ে আরামবাগ মহকুমার সেচ দফতরের অফিসার দীনবন্ধু ঘোষের কথায়, ‘শশাখালির অরোরা খালের উপর সেতু এবং স্লুইস গেট তৈরি হচ্ছে। ৬ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এখানে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনাও আছে।’