বেলগাছিয়া ভাগাড়ে বড়সড় বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। সেই অবহে এবার ধাপার ভবিষ্যৎ নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এখানেও প্রচুর পরিমাণে বর্জ্য জমা রয়েছে। ধাপায় যে বিপদ হতে পারে, তা নিয়ে কলকাতা পুরসভাকে এক দশকের বেশি সময় আগে সতর্ক করেছিল ব্রিটিশ ডেপুটি হাইকমিশনের অফিস। ধাপা থেকে প্রতি বছর কয়েক লক্ষ কিলোগ্রাম মিথেন গ্যাস এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়। ফলে সেক্ষেত্রে ধাপাতেও কি বেলগাছিয়ার ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে? তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিশেষজ্ঞ মহলে। যদিও তার কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই জানিয়েছে কলকাতা পুরসভা। তবে কোনওরকমের দুর্ঘটনা এড়াতে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: মাটির সহনক্ষমতার বাইরে বর্জ্য, বেলগাছিয়া ভাগাড় নিয়ে বিপদের আশঙ্কা বিজ্ঞানীদের
সূত্রের খবর, ধাপায় কোনও ধরনের বিপর্যয় যেন না ঘটে, তার জন্য ব্রিটিশ ডেপুটি হাইকমিশনের অফিসের সঙ্গে পুরসভার মউ স্বাক্ষর হয়েছিল। সেখানে একটি নথির মাধ্যমে ব্রিটিশ হাই কমিশন জানিয়েছিল, প্রতি বছর ধাপা থেকে গড়ে ১৬.৮ লক্ষ কিলোগ্রাম মিথেন ও কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস নির্গত হয়। আর ২০১৩-২০২২ সালের মধ্যে ধাপা থেকে নির্গত কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ ছিল প্রায় ২৫ কোটি কিলোগ্রাম। ফলে সেখানে বেলগাছিয়ার মতো বড়সড় বিপদের আশঙ্কা করছেন অনেকেই। যদিও পুরসভার মেয়র পারিষদ (কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা) দেবব্রত মজুমদার জানিয়েছেন, এখানে বেলগাছিয়ার মতো পরিস্থিতি হওয়া সম্ভব নয়। ধাপা জনবসতি অনেক দূরে রয়েছে। তবে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ধাপার পাশেই চাষিদের কাছ থেকে ৭০ হেক্টর জমি কেনা হবে। সেখানে বিকল্প ধাপা তৈরি করা হবে। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে অর্থ দফতরের অনুমোদন মিলেছে বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, ৬০ একর জায়গা জুড়ে ধাপা অবস্থিত। আগে এই এলাকাজুড়ে আবর্জনা ফেলা হতো। তবে জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে ধাপায় প্রক্রিয়াকরণের কাজ চলছে ২৫ একর জায়গা জুড়ে। বাকি জায়গায় এখন আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। তবে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের আধিকারিকদের বক্তব্য, ধাপা আর আবর্জনার ভার বহন করতে পারছে না। বেলগাছিয়া ডাম্পিং গ্রাউন্ডে বিপর্যয়ের পর তা নিয়ে চিন্তা বেড়েছে। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে, ধাপায় প্রতিদিন প্রায় সাড়ে চার হাজার টনা ময়লা জমা হয়। ফলে প্রতিদিন ধাপার উপর চাপ বাড়ছে। এই অবস্থায় বিকল্প ব্যবস্থা না করলে বেলগাছিয়ার মতো পরিস্থিতি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল রয়েছে।