ডাকনাম ‘লেনিন’। বাবা সিপিআইএমের হোলটাইমার। সেই উদয়ন প্রসাদ এবার মাধ্যমিক পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছে। ৭০০-র মধ্যে পেয়েছে ৬৯১ নম্বর। আর তারপর বালুরঘাট হাইস্কুলের ছাত্রকে সিপিআইএমের তরফে অভিনন্দন জানানো হল। সিপিআইএমের তরফে বলা হয়েছে, ‘মাধ্যমিকের মেধাতালিকায় তৃতীয় হয়েছে উদয়ন প্রসাদ। উদয়নের ডাক নাম লেনিন। বালুরঘাটে বাড়ি। অভিনন্দন উদয়নকে। উদয়নের বাবা, উমেশ প্রসাদ বালুরঘাট পার্টি অফিসের সিপিআই (এম)-র সর্বক্ষণের কর্মী। উদয়ন আমাদের সকলের গর্ব। উদয়নের সঙ্গে আমাদের শুভেচ্ছা (রইল) সকল মাধ্যমিক উত্তীর্ণদের (জন্য)।’
তবে কাজটা খুব একটা সহজ ছিল না উদয়নের পক্ষে। মাধ্যমিকের তৃতীয় হওয়ার পরে বালুরঘাটের প্রাচ্যভারতী পাড়ার বাড়িতে বসে উদয়ন বলেছে, ‘আর্থিক সমস্যা আছে (পরিবারের)। অনেক কষ্ট করে বাবা পড়ান। বাবা পার্টির হোলটাইমার।’
আর ছেলে যে সেই কষ্টের দাম দিয়েছে, তাতে গর্বে বুকে ফুলে যাচ্ছে বাবা উমেশ। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করেছিলাম যে ছেলে ভালো রেজাল্ট করবে। ছোট থেকেই ও ভালো রেজাল্ট করে আসে। (মাধ্যমিকের তৃতীয় হয়েছে) জানার পরে খুবই ভালো লাগছে।’ সেইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘(ছেলের পড়াশোনার ক্ষেত্রে) কোনওরকম ত্রুটি রাখিনি। ভালো-ভালো মাস্টারমশাই রেখেছিলাম।’
উদয়নের ভবিষ্যতের লক্ষ্য কী?
তবে এখানেই থামতে চায় না উদয়ন। থামতে চান না উদয়নের বাবাও। ছেলের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নপূরণ করতে চান। আর্থিক অনটন থাকলেও তা ছেলের স্বপ্নপূরণের ক্ষেত্রে কোনও বাধা হয়ে দাঁড়াবে না বলে জানিয়েছেন উমেশ। তিনি বলেন, ‘সে (পড়াশোনার খরচ) জোগাড় হয়ে যাবে। সবথেকে বড় হল চেষ্টা। চেষ্টা যদি করে (ও সাফল্য পাবে)। সরকারি মেডিক্যাল কলেজ তো আছে।’
উদয়নের পড়াশোনার ধরন
বালুরঘাট হাইস্কুলের ছাত্র জানিয়েছে, একেবারে ঘড়ি ধরে যে পড়াশোনা করত, সেটা মোটেও নয়। যখন ইচ্ছা হত, তখন পড়াশোনা করত। তার কথায়, ‘দিনে বেশিক্ষণ পড়াশোনা করতাম না। সাত-আট ঘণ্টা পড়াশোনা করতাম। যখনই ইচ্ছা হত, তখন পড়তাম। কোনও সময় ধরে পড়তাম না। পড়াশোনা ছাড়াও খেলাতাম। গল্পের বই পড়তাম। টিভিতে খেলা দেখতাম।’ সেইসঙ্গে উদয়ন বলেছে, ‘আশা ছিল যে মেধাতালিকায় আসব। কিন্তু তৃতীয় হব, সেটা ভাবতে পারিনি।’