করোনা আবহে গঙ্গাসাগর মেলার ছাড়পত্র দিল আদালত। বুধবার গঙ্গাসাগর মেলার মামলায় রায় প্রদানে রাজ্য সরকারকে ই–স্নানে জোর দিতে নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি। বলা হয়েছে, ই–স্নানে আগ্রহীদের মেলা থেকেই বিনামূল্যে দিতে হবে কিট। কিট বাড়িতে পৌঁছতে হলে দিতে হবে পরিবহণ মূল্য বা ডেলিভারি চার্জ।
বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশে গঙ্গাসাগর মেলা ও সেই সংক্রান্ত যে স্নানযাত্রা তাতে আর কোনওরকম আইনত বাধা থাকল না। এর পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য সরকার বা প্রশাসনকে ই–স্নানের ওপর জোর দিতে বলেছে। আদালতের নির্দেশ, রাজ্য সরকার ই–স্নানের জন্য যে কিট বানিয়েছে তা বিনামূল্যে দিতে হবে পূণ্যার্থীদের। তা ছাড়া যাঁরা বাড়িতে বসে ই–স্নানের কিট সংগ্রহ করতে চাইবেন তাঁরা যেন শুধু পরিবহণ মূল্যের বিনিময়ে সেই কিট হাতে পান তা নিশ্চিত করতে হবে প্রশাসনকে।
এদিকে, প্রশাসনের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বুধবার পর্যন্ত ১ লক্ষ ৫৬০টি ই–স্নানের কিট বিলি করা হয়েছে। মাত্র ৩৪৩২ জন পূণ্যার্থী সশরীরে স্নানযাত্রায় অংশ নিয়েছেন। সাগরে অন্তত ৩৫টি কেন্দ্র রয়েছে যেখান থেকে ই–স্নানের কিট দেওয়া হচ্ছে পূণ্যার্থীদের।
এদিন আদালতে রাজ্য সরকারের তরফে বলা হয়, গতবার যা জনসমাগম হয়েছিল তার মাত্র ১০ শতাংশ মানুষ এবার এসেছেন। এবং গঙ্গাসাগরের জল যেহেতু বহমান তাই সেই বহমান জলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রে একাধিক পদক্ষেপও নিয়েছে রাজ্য সরকার। এই সব বক্তব্য এবং যুক্তিকেই কার্যত মান্যতা দিয়ে এদিন গঙ্গাসাগর মেলা ও স্নানযাত্রাকে ছাড়পত্র দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি।
রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস মহামান্য আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়ে এদিন বলেন, ‘বুধবার বিকেল ৪টে পর্যন্ত ইতিমধ্যে ৭ লক্ষ ৮০ হাজার পূণ্যার্থী গঙ্গাসাগরে এসে পৌঁছেছেন। তার মধ্যে ১৩টি প্রবেশ পথে ৫ লক্ষ ৩০ হাজার পূণ্যার্থীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়েছে। এরইমধ্যে গঙ্গাসাগরে আসা মানুষের মধ্যে ২৩ হাজার জনের র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করানো হয়েছে। আমাদের একাধিক প্রচার কেন্দ্র থেকে ৭–৮টি ভাষায় ই–স্নানে সকলকে উৎসাহ প্রদান করছি।
উল্লেখ্য, এবার মকর সংক্রান্তি পড়েছে ১৪ জানুয়ারি। পূণ্যস্নান সারতে হবে ১৪ জানুয়ারি সকাল ৬টা ২ মিনিট থেকে ১৫ জানুয়ারি সকাল ৬টা ২ মিনিটের মধ্যে।