এবার হিন্দুদের বাড়িতে ধারালো অস্ত্র রাখার নিদান দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আজ, রবিবার হুগলিতে গিয়ে এই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। হুগলির কুন্তিঘাটে রামমন্দির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এদিন যোগ দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তাঁর এই বক্তব্যের পরই জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে। তার পর আসরে নামেন কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম। পাল্টা কড়া বার্তা দিলেন সুকান্ত মজুমদারকে। এই নিয়ে রাজ্য–রাজনীতি সরগরম হয়ে উঠেছে। সুকান্ত মজুমদার শুধু একজন সাংসদই নন, কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীও। তাঁর মুখে এই ধরনের মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই বিতর্ক দানা বেঁধেছে।
এদিকে ছেলেকে হিন্দু বানানোর নিদান এবং বাড়িতে অস্ত্র রাখার মত দেওয়ায় বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে। সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘ছেলেদের ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার যা বানানোর বানান। কিন্তু আগে ভাল হিন্দু বানান। যে নিজে ধর্মের প্রতি সমর্পিত হবে। আর বাড়িতে একটা করে ধারালো অস্ত্র রাখুন। নিজের ধর্ম–সংস্কৃতি রক্ষা করতে না পারলে ডাক্তার, ব্যারিস্টার যাইহোক, বাস্তবে অন্য কোথাও যেতে হবে তাঁকে। ধর্ম রক্ষায় একজোট হতে হবে। এলাকায় মন্দির তৈরি করুন।’ এটারই পাল্টা ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, ‘প্রথমে আপনারা ভারতীয় তৈরি করুন। মানুষ তৈরি করুন। এই বার্তা আসা উচিত। আমরা ভারতের মানুষ বিশ্বাস করি সর্ব ধর্ম সমন্বয়।’
আরও পড়ুন: মহিষাদল রাজবাড়ি সংস্কারে নবান্নের উদ্যোগ, ২ কোটি টাকায় হচ্ছে সিংহদুয়ার সংস্কার
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসকেও নিশানা করেছেন বিজেপি নেতা। সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, ‘আমরা মানুষকে এটাই বলব রাবণ জীবনে একবারই গেরুয়া পড়েছিল সীতাকে হরণ করার জন্য। যারা ছদ্ম হিন্দু, তাঁদের চিনে নিন। তাহলে হিন্দু সমাজ বাঁচবে। আমি এটাকে স্বাগত জানাব। আমি দেখে খুশি হয়েছি যে, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ গুলি চালাতে জানে। আমি ভাবতাম যে থ্রিনটথ্রি বন্দুকগুলি চলে না। কমসে কম গুলি চালাতে পেরেছেন। ডিজি সাহেব রাজীব কুমারের তো উত্তরপ্রদেশে বাড়ি। তিনি বোধহয় উত্তরপ্রদেশের যোগীজির থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছেন।’
এছাড়া বাংলাদেশে অশান্তির জেরে বাংলার সীমান্তের উপর চাপ ক্রমশ বাড়ছে। নদিয়া, বনগাঁ–সহ উত্তরবঙ্গের একাধিক জায়গায় অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটছে। কোচবিহার, মালদায় বিএসএফ–বিজিবির মধ্যে বিবাদও প্রকাশ্যে এসেছে। সুকান্তকে উদ্দেশ্য করে ফিরহাদ হাকিমের কথায়, ‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসাবে একথা বলা উচিত নয়। হিন্দু না মুসলমান জিজ্ঞাসে ক’জন? প্রথমে আপনারা ভারতীয় তৈরি করুন। মানুষ তৈরি করুন। এই বার্তা আসা উচিত। আমরা ভারতের মানুষ বিশ্বাস করি সর্ব ধর্ম সমন্বয়। হিন্দু যাঁরা প্রকৃত, ঠাকুর রামকৃষ্ণ বলে গিয়েছেন, যত মত, তত পথ। তাঁর বার্তা ভারতের বার্তা। সুকান্তবাবুর বার্তা, ভগবতের বার্তা। ভারতের বার্তা নয়। ধর্মের উস্কানি দিয়ে প্রকৃত নজর ঘোরানোর চেষ্টা করছে। এই চিড়েতে ভারতবাসী ভিজবে না।’