পুলিশের কামড় নিয়ে তৃণমূল বিধায়ক অজিত মাইতির মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাল বিরোধীরা। এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে একযোগে ক্ষোভ উগরে দিল বাম - বিজেপি ও কংগ্রেস। এব্যাপারে মন্তব্য করতে রুচিতে বাধে, বললেন আক্রান্ত চাকরিপ্রার্থী অরুণিমা পাল।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুর শহরে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অজিতবাবু বলেন, ‘দিনের পর দিন গোটা সরকারকে অপদস্থ করার চেষ্টা করে। পুলিশকে যদি কামড়ে দেয় তার বিনিময়ে পুলিশ যদি কামড়ে না দেয় তো কি রসগোল্লা ছুঁড়বে। এটা ভেবে দেখবেন। আপনাদের প্রতি মমত্ববোধ - দরদ রেখেই এই কথাটা বললাম। আজ এই রকম একটা চক্রান্ত সারা বাংলা জুড়ে চলছে। আমাদের এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে’।
জবাবে পুলিশের কামড় খাওয়া প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থী অরুণিমা পাল বলেন, ‘কিছু কথার জবাব দিতে রুচিতে বাঁধে। এই ধরণের অসংবেদনশীল কথা সমাজকে খারাপ বার্তা দিচ্ছে। নৈতিক অধঃপতন থেকে মুক্তি চাই’।
অজিতবাবুর বক্তব্যকে কটাক্ষ করে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘এবার তো মনে হচ্ছে অজিত মাইতিও কামড়ে দেবে। কোনও সভ্য দেশে এটা হতে পারে। পুলিশকে আজ কামড়ানোর ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। পুলিশের আর কিছু করার নেই? যে শুনছে, অবাক হয়ে যাচ্ছে। সরকার স্বীকার করতে চাইছে না যে ধীরে ধীরে সব জায়গায় তাদের নিয়ন্ত্রণ কমে যাচ্ছে। পুলিশকে যে ভাবে পার্টির কাজে ব্যাবহার করা হচ্ছে, চুরি - লুঠপাট করতে বাধ্য করা হচ্ছে তাতে পুলিশ কর্মীরাও হতাশ হয়ে যাচ্ছেন। তাই পুলিশেরও নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেই। নইলে এই ধরণের কাজ তারা করতে পারে না’।
সিপিএম নেবা শমীক লাহিড়ী বলেন, ‘পুলিশ কামড়ে দিচ্ছে? কোন পুলিশ ম্যানুয়ালে লেখা আছে? কেন এখনও ওই পুলিশকে সাসপেন্ড করে বিভাগীয় তদন্ত করার নির্দেশ দেননি মুখ্যমন্ত্রী? তার মানে ওর নির্দেশ আছে না কি? আঁচড়ে দেও, কামড়ে দেও, পেটাও। কেউ সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারবে না? মন্ত্রী টাকা খাবে চাকরি বিক্রি করবে। সাংসদ বিধায়করা টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রি করবে। আর প্রতিরোধ করলেই পুলিশ নামিয়ে পেটাও? জেলে ঢুকিয়ে দেও? এ কোনও সভ্য গণতান্ত্রিক সমাজে চলে না কি’?
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী যা শেখাচ্ছেন ওনার দলের নেতারা তাই বলছেন। একজন মহিলাকে প্রকাশ্য রাস্তায় পুলিশ কামড়ে দিল। মুখ্যমন্ত্রী কি নিন্দা করেছেন? বাংলার মানুষ সব দেখছে। ওনার কি উচিত ছিল না প্রকাশ্যে ঘটনার নিন্দা করা’?